প্রসূতি ও শিশুমৃত্যু কমাতে ‘ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি’র উপর গুরুত্ব দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু হাসপাতালে এসেও কি শেষরক্ষা হচ্ছে? এমনই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে গত সিউড়ি জেলা হাসপাতালে দু’মাসে মোট ১১ জন প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা।
কী ভাবে এত জন প্রসূতির মৃত্যু ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গড়েছে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই দফতরের নির্দেশে হাসপাতাল ঘুরে গিয়েছেন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চৈতালি দত্তরায়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সিউড়ি হাসপাতালের সুপার শোভন দে বলছেন, ‘‘সত্যিই অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। ওই দু’মাসের আগে কিন্তু এই হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর হার এমন ছিল না। আমরা তদন্ত করছি।’’
দফতর সূত্রে খবর, সিউড়ি হাসপাতালের উপর জেলার একটা বড় অংশই শুধু নয়, নির্ভরশীল পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডেরও বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রতিদিন গড়ে ৫০টি শিশুর জন্ম হয় ওই হাসপাতালে। যে ১১ জন প্রসূতি মারা গিয়েছেন, তাঁদের সিংহভাগই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। এ ছাড়াও মৃত প্রসূতিদের মধ্যে সিউড়ি ১, সাঁইথিয়া, খয়রাশোল ব্লক এলাকার বাসিন্দারাও রয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রসূতিদের মৃত্যু হয়েছে ‘হাইপার টেনশনে’র দরুন খিঁচুনি হওয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানাচ্ছেন, গর্ভাবস্থায় এক জন সন্তানসম্ভবা মাকে কয়েকটি নির্দিষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে আনা উচিত। সব সময় সব ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না। যে ক’জন প্রসূতি মারা গিয়েছেন, তাঁরা সকলেই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা অন্য হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে এসেছিলেন। আগে ‘হাইরিস্ক’ মাদার বা সন্তানসম্ভবার প্রসবকালীন সমস্যা এড়াতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে জেলা হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো আরও উন্নত হওয়ায় রেফার করার প্রবণতা কমেছে। ওই প্রসূতিদের মৃত্যুর নেপথ্যে সেটাও একটা কারণ হতে পারে বলে মত ওই চিকিৎসকের। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমরা ভীষণ উদ্বিগ্ন। কলকাতা থেকে তদন্তে টিম আসবে। এমনটা কেন ঘটল, তার কারণ খুঁজে বের করা হবে।’’
এ দিন বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy