Advertisement
১৫ মে ২০২৪
Kanyashree

Kanyashree: কন্যাশ্রীর টাকায় মাস্ক বিলি, ইন্দাসের পায়েলকে কুর্নিশ জানাবে রাজ্যও

বাঁকুড়ার দশম শ্রেণির পায়েলকে পুরস্কৃত করবে রাজ্য। আরও দুই ছাত্রীকেও দেওয়া হবে পুরস্কার।

মাস্ক বিলি করছে পায়েল।

মাস্ক বিলি করছে পায়েল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২১ ১৮:৪৪
Share: Save:

কন্যাশ্রীর হাতে উঠতে চলেছে কন্যাশ্রী পুরস্কার। বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের ছোট গোবিন্দপুর এস এন পাঁজা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী পায়েল নন্দীর মাথায় উঠতে চলেছে সেই শিরোপা। করোনা সচেতনতায় কন্যাশ্রীর টাকা দিয়ে মাস্ক কিনে জনসাধারণের মধ্যে বিলি করেছিল পায়েল। দশম শ্রেণির ছাত্রীর নজরকাড়া সেই কৃতিত্বকেই এ বার স্বীকৃতি জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার।

ছোটবেলা থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে ছিল পায়েলের। বাবা, মা এবং শিক্ষকদের কাছে সেই শিক্ষাই পেয়েছিল। কন্যাশ্রীর টাকা হাতে আসার পর সেই ইচ্ছেটা আরও চাগাড় দিয়ে উঠেছিল মনের ভিতর। চলতি বছর মে মাসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন গোটা দেশ ঘরবন্দি, তখন বাবাকে সঙ্গে করে সে সোজা হাজির হয়েছিল গ্রামের ব্যাঙ্কে। নিজের কন্যাশ্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু টাকা তুলে মাস্ক কিনে বাড়ি ফিরেছিল। তার পর সেই মাস্ক একশো দিনের শ্রমিক থেকে শুরু করে পথচলতি মানুষদের মধ্যে বিলি করেছিল সে। গত কয়েক মাস ধরে নিজের এলাকায় পায়েলের একক ভাবে লাগাতার এই সচেতনতামূলক প্রচার নজর কেড়েছে সকলের। আর সেই কাজের স্বীকৃতি হিসাবে আগামী ১৪ অগস্ট কন্যাশ্রী দিবসে বাঁকুড়ার দশম শ্রেণির পায়েলকে পুরস্কৃত করবে রাজ্য সরকার। ওই জেলার আরও দুই ছাত্রীকেও দেওয়া হবে পুরস্কার। বাঁকুড়ার কন্যাশ্রী প্রকল্পের আধিকারিক রঞ্জনা রায় বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকায় মাস্ক বিলি ছাড়াও, করোনা কালে অন্যদের ছবি আঁকা শেখানো এবং জাতীয় মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় সফল হওয়ায় বাঁকুড়া জেলার তিন ছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’

পায়েলের বাড়ি ইন্দাসের ছোট গোবিন্দপুর গ্রামের নন্দীপাড়ায়। বাবা, মা এবং ছোট ভাই মিলিয়ে চার জনের সংসার। বাবা সুজিত পেশায় মাছচাষি। মা মধুমিতা গৃহবধূ। ছোট থেকেই মেধাবী পায়েল। স্কুলের পরীক্ষায় প্রতি বছর প্রথম অথবা দ্বিতীয় স্থানে থাকে সে। পায়েল বলছে, ‘‘কন্যাশ্রীর টাকায় আমি আমার আশপাশের কয়েক জন মানুষকে করোনার ছোবল থেকে বাঁচাতে পেরেছি এটাই আমার কাছে বড় পাওনা।’’ মধুমিতা বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ওদের মানবতার পাঠ দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে মেয়ে যখন নিজের ইচ্ছায় মাস্ক বিলির প্রস্তাব দেয়, আমরা না করিনি।’’

পায়েলের স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, “গত মে মাসে আমি করোনা আক্রান্ত হই। সেই সময় পায়েল আমাকে ফোন করে। তখন আমি পায়েলকে মাস্ক পরার কথা বলি। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে আশেপাশের মানুষদের মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তাকে বোঝাই। এতেই পায়েল উদ্বুদ্ধ হয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়ে। ও মাস্ক কিনে এলাকার গরিব মানুষদের মধ্যে বিলি করে। পায়েলের এই কাজ নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্তমূলক।’’

ভবিষ্যতে পুলিশ হতে চায় পায়েল। তার বক্তব্য, ‘‘মানুষ যখনই বিপদে পড়ে তখনই পুলিশ তাদের সাহায্যে এগিয়ে যায়। বন্যা, খরা, ভূমিকম্প সর্বোপরি চোখের সামনে ঘটে চলা অতিমারিতে পুলিশের ভূমিকা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমিও চাই মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে । তাই আমার ইচ্ছে পুলিশ আধিকারিক হওয়ার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Kanyashree prize declared Teen Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE