Advertisement
২১ মে ২০২৪
Higher Secondary Exam 2024

বাবার কোলে চড়েই উচ্চ মাধ্যমিক মোরসালিনের

চাকদহ ব্লকের শিলিন্দা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিয়া হাইস্কুল (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষার সিট পড়েছে মোরসালিনের।

পরীক্ষার শেষে বাবার কোলে চেপে বাড়ি ফিরছেন মোরসালিন। বুধবার।

পরীক্ষার শেষে বাবার কোলে চেপে বাড়ি ফিরছেন মোরসালিন। বুধবার। ছবি: সৌমিত্র সিকদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাকদহ  শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৭
Share: Save:

জন্ম থেকেই চলচ্ছক্তিহীন। এমনকী দাঁড়ালেও কষ্ট হয়। নানা জায়গায় চিকিৎসাতেও ছেলের পায়ের জোর ফেরাতে পারেননি বছর আঠারোর মোরসালিন মণ্ডলের বাবা। কিন্তু তাই বলে পড়াশোনায় সেটাকে বাধা হতে দেননি বাবা-মা। বা বলা ভাল মোরসালিন। অদম্য জেদ নিয়ে চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশোনা। তারই সুফল, এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মোরসালিন।

কিন্তু হাঁটতে তো পারেন না। তাতে কী! বাবা ফজর আলি মণ্ডল ছেলেকে পরীক্ষার দিনগুলিতে কোলে করে পৌঁছে দিচ্ছেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। পরীক্ষা শেষ হলে ফের বাবার কোলে চেপেই বাড়িতে ফিরছেন মোরসালিন।

চাকদহ ব্লকের শিলিন্দা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিয়া হাইস্কুল (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষার সিট পড়েছে মোরসালিনের। বুধবার পরীক্ষা শেষে বালিয়া স্কুলে দাঁড়িয়ে চাকদহের বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষার্থী মোরসালিনের বাবা ফজর আলি বলেন, ‘‘আমার ছেলের কোমরের নীচের অংশ খুব দুর্বল। জন্ম থেকেই হাঁটতে পারে না। দাঁড়াতেও পারে না। তবে বসতে পারে।‘‘ তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানো হয়েছে। চিকিৎসার জন্য জমিও বিক্রি করতে হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখনও হাঁটতে পারে না। কিন্তু তাই বলে তো আর পরীক্ষা বন্ধ থাকতে পারে না। তাই ছেলেকে কোলে নিয়ে পরীক্ষার হলে পৌঁছে দিই। পরীক্ষা শেষ হলে আবার কোলে করে বাড়িতে নিয়ে আসি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষিকারাও খুব সাহায্য করছেন।’’

দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরগাছি এলাকার বাসিন্দা মোরসালিন অবশ্য জানিয়েছে, তাঁর পরীক্ষা দিতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। পরীক্ষাও ভাল হচ্ছে। লেখাপড়া করার জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষিকারাও সাহায্য করেন। বালিয়া হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক পুষ্পরাজ সরকার বলেন, ‘‘ছেলেটির আলাদা ঘরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রটিই তাতে রাজি হয়নি। সে অন্যদের সঙ্গেই পরীক্ষা দিচ্ছে। ওর মনের জোর প্রচণ্ড।’’

বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশীতাভ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মোরসালিন পঞ্চম শ্রেণি থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে পড়ছে। শারীরিক ভাবে ওর সমস্যা থাকলেও মানসিক ভাবে ও খুবই শক্ত। ওর যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে আমাদের
নজর থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chakdaha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE