বাঁকুড়ার একটি পুজোর উদ্বোধনে অভিষেক। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের কার্যত মুছে দিয়েছে তৃণমূল। তার আগে বিধানসভা বা পুরসভা ভোটেও তৃণমূলের কাছে মাথা তুলতেই পারেনি বিরোধীরা। আগামী লোকসভা ভোটেও বিরোধীদের হাল একই হতে চলেছে বলে শনিবার বাঁকুড়ায় এসে বললেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অসমে গণহত্যার প্রতিবাদে শনিবার বাঁকুড়া শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে মাচানতলায় সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক। বক্তৃতায় বিজেপি-সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে আক্রমণ করেন অভিষেক।
তিনি বলেন, “অসমে বাঙালি হত্যার জন্য বিজেপি নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে দিল্লির বুকে বৃহত্তর আন্দোলন করব আমরা। হম্বি-তম্বি করো না। কী ভাবে জবাব দিতে হয় পঞ্চায়েত ভোটে দেখিয়েছি। তার আগে পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দেখিয়েছি। আগামী লোকসভা ভোটেও দেখিয়ে দেব।”
২৯ অক্টোবর মাচানতলার অদূরে তামলিবাঁধ মোড়ে সভা করে রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তৃণমূলের ছোট, বড়, মাঝারি মাপের নেতাদের দেখে নেওয়ার ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের পুলিশকে ‘দিদির পুলিশ’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেছিলেন, আগামী লোকসভা ভোটে দিল্লি থেকে ‘দাদার পুলিশ’ আসবে। তাই তৃণমূলকে রুখে দেওয়া যাবে বলে কর্মীদের ভরসা দিয়ে গিয়েছিলেন দিলীপ। এ দিন অভিষেক জবাব দিতে গিয়ে জানান, তাঁরা সংযম দেখাচ্ছেন। না হলে বিজেপিকে বাংলায় খুঁজে পাওয়া যাবে না।
শুক্রবার থেকে বাঁকুড়ায় বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক আরএসপির রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে। সেই সম্মেলন শুরু হয়েছে মাচানতলায় অভিষেকের সভার একশো মিটার দূরে বঙ্গ বিদ্যালয়ে। এ দিন আরএসপির জেলা সম্পাদক গঙ্গা গোস্বামী অভিযোগ করেন, “অভিষেকের মিছিল হবে বলে তৃণমূলের লোকজন রাস্তার পাশ থেকে আমাদের দলীয় পতাকা খুলে ফেলে দিয়েছে। ওরা
গণতন্ত্রের হত্যাকারী।”
যদিও তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব তা মানেননি। পরে বামফ্রন্টকে কটাক্ষ করে অভিষেক অভিযোগ করেন, “সিপিএম, আরএসপি বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ওরা কোনও দিন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেনি। তবে মানুষের হয়ে তৃণমূল আন্দোলন করবে।” এ দিন সভা সেরে সন্ধ্যায় বাঁকুড়া শহরে দু’টি কালীপুজোর উদ্বোধন করেন অভিষেক।
অভিষেককে কটাক্ষ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, “ওঁর কর্মসূচির জন্য সাধারণ মানুষের শহরে ঢোকাই কার্যত এ দিন নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ যানবাহন আটকে দেয়। কোনও রাজনৈতিক দলের নেতার জন্য এমন ব্যবস্থা দেখা যায় না। জনজীবনকে অচল করে দিয়ে এ কেমন মানুষের জন্য আন্দোলন?’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শহরে ঢোকা মোটেই নিষিদ্ধ করা হয়নি। নিরাপত্তার কারণে কিছু এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy