প্রত্যয়ী: আমান। নিজস্ব চিত্র
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় রাজ্যে তৃতীয় স্থান দখল করলেন নানুরের শেখ আলি আমান। তিনি এ বছর চণ্ডীদাস স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড স্কিল ডিপার্টমেন্ট’ আয়োজিত উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বৃত্তিমূলক বিভাগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
স্কুল সূত্রে খবর, মে মাসে ওই পরীক্ষা হয়। ফল বের হয় জুন মাসে। ৯১.৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন আমান। সেই সময় অবশ্য মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়নি। সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ওই তালিকায় আমানের নাম তৃতীয় স্থানে রয়েছে বলে খবর পান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আমানের স্কুল ও বাড়িতে ছড়ায় খুশির হাওয়া। পড়াশোনার সুবিধার জন্যে আমান এখন নানুরের বন্দর গ্রামে থাকেন। তাঁর আসল বাড়ি পুন্দরা গ্রামে। পুন্দরা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে নানুর হাইস্কুলে ভর্তি হন তিনি। দুই ভাই, বাবা আর মাকে নিয়ে অভাবের সংসার। এক ভাই পড়ে একাদশ শ্রেণিতে। ছোট ভাই প্রথম শ্রেণিতে। বাবা শেখ আলি আমজাদের বন্দর বাসস্ট্যান্ডে উপহার সামগ্রীর দোকান। দোকান আর যৎসামান্য জমিতে চাষের আয়ে টেনেটুনে চলে সংসার। অভাবের সঙ্গে লড়াই করেও ছেলের এমন ফলের খবরে আপ্লুত শেখ আলি, তাঁর স্ত্রী বাসিরা বেগম। তাঁরা বলেন,‘‘অভাবের জেরে সব সময় ওকে পড়াশোনার জন্য তেমন সাহায্য করতে পারিনি। তার পরেও ও এমন রেজাল্ট করবে ভাবিনি।’’
ভবিষ্যতে আমান সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। বর্ধমানের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। শুধু পড়াশোনা নয়, গান-বাজনাতেও সমান পারদর্শী আমান। রাজ্য ক্রীড়া এবং যুবকল্যাণ দফতর আয়োজিত এ বছরের ছাত্র-যুব উৎসবে আধুনিক গানে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এ সবের জন্যে আমান অবশ্য শিক্ষকদের উৎসাহই অন্যতম অবদান বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা সব সময় উৎসাহ জুগিয়েছেন। সে জন্যেই এত দূর এগোতে পেরেছি।’’
নানুর হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অরিজিৎ দাস জানান, ৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দফতর থেকে ফোন করে আমানের তৃতীয় স্থান অধিকারের খবর জানানো হয়। এতে স্কুলের মুখ উজ্জ্বল হয়েছে। জানুয়ারি মাসে স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসে আমানকে সংবধর্না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy