লটারির দোকানে আনন্দ খ্যাপা বাউল। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
কেউ লটারির টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন। কেউ আবার চালাচ্ছেন অন্যের টোটো। ওঁরা সকলেই বাউল শিল্পী। করোনা-পরিস্থিতিতে রোজগার হারিয়ে এমনই অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বোলপুরের ওই বাউলেরা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে লকডাউনের সময় থেকে মেলা, খেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান প্রায় বন্ধ। পুজোর মরসুমেও অনুষ্ঠান না হওয়ায় রোজগার হয়নি বহু জনের। এ ভাবে আট মাস পার করার পরে এঁদের অনেকেরই অবস্থা কাহিল। সংসার চালাতে গিয়ে জমানো টাকাও ফুরতে বসেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে লটারি বিক্রি, টোটো চালানোর মতো কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।
ইলামবাজারে আদি বাড়ি হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে বোলপুরে বাস করেন আনন্দ খ্যাপা বাউল। তিনি বলছেন, ‘‘বোলপুুুুর শহর-সহ এই জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করে মাস গেলে দশ থেকে বিশ হাজার টাকা রোজগার হতো। মা-বাবা ও আমার ভালভাবেই সংসার চলে যেত।’’
করোনা সব বদলে দিয়েছে। এখন বোলপুর সুপার মার্কেট এলাকায় রাস্তার ধারে টেবিল পেতে লটারির টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন আনন্দ। সেই পুঁজি দিয়েও সাহায্য করেছেন তাঁরই এক আত্মীয়। তাঁর কথায়, “বাধ্য হয়ে এই পেশায় আসতে হয়েছে। না হলে সংসার চালাতে আরও কষ্ট হত।”
গান সরিয়ে আপাতত অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন বোলপুরের শ্যামবাটি এলাকার বাপ্পা দাস বাউলও। মাসখানেক হল অন্যের টোটো চালিয়েই সংসার চালাচ্ছেন ওই শিল্পী।
বাপ্পা দাস বাউলের কথায়, “অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন কাটছিল আমাদের। করোনা পরিস্থিতির কারণে সমস্ত উৎসব অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে টোটো চালাচ্ছি।’’ রোজগার যাই হোক, টোটোর মালিককে দিয়ে দিতে হয় প্রতিদিন ২০০ টাকা। মাস গেলে সাকুল্যে হাজার পাঁচেক টাকা আয় হয় কি না সন্দেহ।
বাউলদের একটা বড় অংশের রোজগারের উৎস ছিলে ট্রেনে আসা পর্যটকেরা। ট্রেন স্বাভাবিক হয়নি বলে তাঁদের গান শোনানোও বন্ধ। পর্যটকেরা আসছেন নিজেদের গাড়িেত। নেই রোজগারও। আরও কত দিন এমন চলবে, উত্তর জানা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy