Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নেই ‘প্রস্তাবক’, লড়তেই পারলেন না আট প্রার্থী

বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের অভিযোগ, ‘‘গ্রামেগঞ্জে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে শাসকদল।’’

দর্শক পুলিশ। পাশেই শাসকদলের বাহিনী। রামপুরহাট কামারপট্টি মোড়ে। নিজস্ব চিত্র

দর্শক পুলিশ। পাশেই শাসকদলের বাহিনী। রামপুরহাট কামারপট্টি মোড়ে। নিজস্ব চিত্র

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩৮
Share: Save:

আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও আট বিজেপি প্রার্থী মনোনয়ন জমা করতে পারল না। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিজেপির ওই প্রার্থীরা প্রস্তাবক নিয়ে আসতে না পারায় এমনটা হয়েছে। বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের অভিযোগ, ‘‘গ্রামেগঞ্জে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে শাসকদল। সোমবার রামপুরহাট শহরে যে পরিস্থিতি ছিল, তাতে প্রস্তাবকদের নিয়ে আসা মুশকিল ছিল। যত দূর জানি প্রস্তাবক না থাকার জন্য মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি দলের প্রার্থীরা।’’ এ ব্যাপারে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন রামকৃষ্ণবাবু। মনোনয়ন জমার ঘোষিত শেষ দিন ছিল সোমবার। রাতে কমিশন নির্দেশ দেয়, আজ মঙ্গলবারও মনোনয়ন চলবে।

এ দিকে, আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও শুধু প্রস্তাবককে হাজির না করাতে পারায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘এর জন্য দায়ী বিজেপি নেতৃত্বের অপদার্থতা। আসলে ফাঁকা কলসির আওয়াজ বেশি। বিজেপিরও তাই অবস্থা।’’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল নলহাটিতে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বিজেপি রাজ্য যুব মোর্চার সম্পাদক ধ্রুব সাহা সহ মোট ২৪ জনকে গ্রেফতার করে। ৭ এপ্রিল রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে ধৃতদের হাজির করানো হয়। বিচারক অংশুমান চট্টোপাধ্যায় তাঁদের মধ্যে চার জনকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বাকি ২০ জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। পাশাপাশি বিচারক উচ্চ আদালতের নির্দেশে ধৃতদের মধ্যে আট বিজেপি প্রার্থী যাতে মনোনয়ন জমা করতে পারে, তাদের ব্যবস্থা করতে জেলা পুলিশ সুপার এবং রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত ধৃত কর্মীদের আইনজীবীকেও প্রয়োজনে মনোনয়ন জমায় সাহায্য করার নির্দেশ দেয়। পরে আদালত পুলিশ হেফাজতে থাকা চার জনের মধ্যে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দু’জনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চা সম্পাদক ধ্রুব সাহা জেলা পরিষদের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। বাকি সাত জন গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে সোমবার ধ্রুব সাহাকে রামপুরহাট মহকুমাশাসকের অফিসে দুপুর ২টো ৫০ নাগাদ নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, ধ্রুবর সঙ্গে কোনও প্রস্তাবক, এমনকি কোনও সাক্ষী এবং মনোনয়ন জমার ডিসিআর কাটার মতো টাকাপয়সা ছিল না। সেই জন্য শেষ লগ্নে পৌঁছেও ধ্রুব মনোনয়ন জমা করতে পারেননি।

অন্য দিকে, নলহাটি ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ধৃত সাত বিজেপি প্রার্থীকে দুপুরে নলহাটি ১ ব্লক প্রশাসন কার্যালয়ে সোমবার দুপুর ২ টো ৩৮ মিনিটে হাজির করান রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মিতুনকুমার দে। সেখানেও প্রার্থীর সঙ্গে কোনও প্রস্তাবক, সাক্ষী, ডিসিআর কাটার টাকাপয়সা ছিল না। ফলে ওই সাত জনও মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি।

জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে পুলিশের গাফিলতি ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE