Advertisement
১১ নভেম্বর ২০২৪

কোর্ট চত্বরে বন্ধ হল বিড়ি, সিগারেট বিক্রি

বাঁকুড়া জেলার কয়েকটি জায়গায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে তামাকজাত দ্রব খাওয়া ও বেচাকেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু তার আগের দিন বুধবার থেকেই বাঁকুড়া আদালতে বিড়ি, সিগারেট, গুটখা বেচাকেনা বন্ধ করে দিলেন দোকানিরা!

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৪
Share: Save:

বাঁকুড়া জেলার কয়েকটি জায়গায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে তামাকজাত দ্রব খাওয়া ও বেচাকেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু তার আগের দিন বুধবার থেকেই বাঁকুড়া আদালতে বিড়ি, সিগারেট, গুটখা বেচাকেনা বন্ধ করে দিলেন দোকানিরা! আদালত চত্বরে কাউকে প্রকাশ্যে ওই নেশাসামগ্রী খেতেও দেখা গেল না!

অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) নবকুমার বর্মন জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে জেলার সমস্ত সরকারি অফিস চত্বর, হাসপাতাল চত্বর এবং স্কুল-কলেজ প্রাঙ্গণের ১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য সেবন ও বেচাকেনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে জনবহুল রাস্তাঘাট বা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে আরও কিছু দিন প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় জেলা প্রশাসন ভবন ও লাগোয়া আদালত চত্বরের বিভিন্ন দোকানে নবকুমারবাবুর নেতৃত্বে আধিকারিকেরা প্রচার চালান। তাঁরা এই তল্লাটে বিড়ি, সিগারেট, গুটখা, খৈনির মতো তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি ও খাওয়া যাবে না বলে দোকানিদের নির্দেশ দেন। তারপর থেকে বুধবার বাঁকুড়ার আদালত চত্বর ও জেলা প্রশাসন ভবন চত্বরের কোনও দোকানেই তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি হতে দেখা যায়নি। কাউকে প্রকাশ্যে সিগারেট, বিড়ি খেতেও দেখা যায়নি। আদালত চত্বরের সেরেস্তায় বসে যে আইনজীবীদের ঘন ঘন সিগারেটে সুখটান দিতে দেখা যেত, তাঁদের অনেককেই এ দিন দূরে গিয়ে সিগারেট খেতে দেখা গিয়েছে। এক আইনজীবীর কথায়, “সদ্য নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ক’টা দিন সংযত থাকাই ভাল। তারপর কী হয় দেখা যাক।’’ জেলা পরিষদ চত্বরের এক পান দোকানির কথায়, “সিগারেট, গুটখা এই চত্বরের মধ্যে বিক্রি করছি না। ব্যবসা এক ঝটকায় অনেকটাই পড়ে গিয়েছে। কিছুই তো করার নেই।”

এ দিকে জেলা প্রশাসন জনবহুল এলাকায় তামাক দ্রব্য বিক্রি ও সেবনে নিষেধাজ্ঞা আনতে চলেছে এই খবর জানা ছিল না বহু ব্যবসায়ীরই। সংবাদ মাধ্যমে বুধবার এই খবর দেখে তাই শোরগোল পড়ে যায়, তাঁদের মধ্যে। প্রকাশ্যে কেউই এই নিষেধাজ্ঞার সরাসরি বিরোধিতা করছেন না। তবে ব্যবসায়ীদের একাংশ অবশ্য আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন।

এসইউসি প্রভাবিত বাঁকুড়া জেলা হকার সংগঠন কমিটির পক্ষে রবিন দত্ত বলেন, “জনবহুল এলাকায় তামাকজাত দ্রব্য সেবন বন্ধ করার প্রশাসনিক উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে হঠাৎ করেই ধরপাকড় করার আগে ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে উদ্যোগী হতে হবে প্রশাসনকে।’’ ব্যবসায়ীদের একাংশ যে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তা নিয়ে রবিনবাবু বলেন, “পান গুমটিতে তামাক দ্রব্য ছাড়া আরও অনেক কিছু জিনিস বিক্রি হয়। ফলে বিরাট কিছু ক্ষতি না হলেও প্রভাব নিশ্চয় পড়বে।’’

এই নিষেধাজ্ঞা প্রশাস ন কতটা বাস্তবায়িত করতে পারবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে অনেকেই তুলে ধরছেন ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচিতে হেলমেট না পরা মোটরবাইক আরোহীদের পাম্পে তেল দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞার কথাও তুলছেন। তাঁদের কথায়, প্রায় সমস্ত পাম্পেই ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’-এর ব্যানার থাকে, অথচ কোথাও ওই নিয়ম মানা হচ্ছে না। এ ছাড়া বছর খানেক আগেও বাঁকুড়া আদালত চত্বরে সিগারেট বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মাসখানেক বন্ধ থাকলেও, পরে ফের যেই কে সেই।

এ বার অবশ্য কঠোর প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “আমরা বিশেষ জায়গায় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি ও সেবন বন্ধ করতে কড়া ব্যবস্থা নেব।” মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা বলেন, “যে কোনও সময়ে আমরা অভিযান চালাতে পারি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Tobacco ban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE