সওয়ারি: প্রচারই সার। আইন ভেঙেই রাজপথে হেলমেট-হীন যাতায়াত। বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র
‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচারেও পুরোপুরি রোখা যায়নি দুর্ঘটনা। বোলপুরের রাস্তায় হেলমেট-হীন মোটরসাইকেল সওয়ারির দেখা মেলে অনেক সময়ই। রাস্তার আইন না মানার ঘটনাও ঘটে মাঝেমধ্যেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক কয়েকটি দুর্ঘটনার নথি থেকে জানা গিয়েছে, মোটরসাইকেল চালক বা সওয়ারি, কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। দুর্ঘটনার জেরে মাথায় গুরুতর আঘাত লেগে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের বেশির ভাগের। এমন দুর্ঘটনার কথা বারবার সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। তাতেও কাজ হয়নি কিছুই। রাস্তার পুলিশের নজরদারির ভয়ে হেলমেট নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও, মাথার বদলে মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝোলে সেগুলি। পুলিশ দেখে হেলমেট পড়ে নেন অনেকে। ওই এলাকা পেরিয়ে যাওয়ার পর অন্যদের সতর্ক করতে করতে যান— ‘সামনে চেকিং চলছে, যাবেন না।’ সেই সময় মোটরসাইকেলে হেলমেট টাঙানো থাকলে সুবিধা একটাই, ওই রাস্তাটুকু হেলমেট পরে নির্বিঘ্নে পেরিয়ে যাওয়া। হেলমেট সঙ্গে না থাকলে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হয় গন্তব্যে। কয়েক মাস আগেও সওয়ারির মাথায় হেলমেট না থাকলে পেট্রোল পাম্পে মিলছিল না তেল। এখন সেই নিয়মের বালাই নেই।
শুধুমাত্র হেলমেট ব্যবহারই নয়, পথ নিরাপত্তার অন্য নিয়ম বেশির ভাগ চালকই মানছেন না বলে অভিযোগ। পথচারীদের ভিড় থাকা রাস্তাতেও তীব্র গতিতে চলে গাড়ি। রাস্তা ফাঁকা থাকলে গতি বাড়ে কয়েক গুণ। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, কানে হেডফোন দিয়ে মোটরসাইকেল চালান অনেকেই। কখনও কখনও এক-একটা মোটরসাইকেলে থাকে তিন-চার জন সওয়ারি। মাথায় হেলমেট ছাড়াই।
বীরভূম পুলিশের দাবি, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচারে তারা যথেষ্ট উদ্যোগী। বিভিন্ন সময় সচেতনতা শিবির করে সাধারণ মানুষকে বিষয়গুলি পথ নিরাপত্তার বিষয়ে বোঝানো হয়। পৌষমেলার সময় মেলা চত্বরেই চলেছে প্রচার। গত ১৮ জানুয়ারি বীরভূম জেলা পুলিশ ও বোলপুর হাইস্কুল ট্রাফিক ক্লাবের উদ্যোগে পথ নিরাপত্তা বিষয়ে একটি লেখা (পোস্টকার্ড) প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। বোলপুর ডাকবাংলো স্টেডিয়ামে ওই প্রতিযোগিতায় বোলপুরের বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৫০০ জন ছাত্রছাত্রী সামিল হয়। জানুয়ারিতেই পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে জেলা পুলিশের উদ্যোগে বোলপুর থানা, শান্তিনিকেতন থানা, বোলপুর ট্রাফিকের পক্ষ থেকে পথ নিরাপত্তার প্রচার চালানো হয়। এ সবের পরও সচেতনতা তেমন ভাবে গড়ে না ওঠায় পুলিশকর্তারা নিরাশ।
তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘প্রচারে কোনও খামতি নেই। কিছুটা সচেতন হয়েছেন চালকদের একাংশ। তবে বেশির ভাগই এখনও নিয়ম মানছেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy