Advertisement
১৯ মে ২০২৪
লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন যুব তৃণমূল নেতা

সরকারি জমি দখল কারখানার

রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নন্দুকা গ্রামের সংস্থার সিমেন্ট ও ছাই ইট কারখানা,আদ্রার বড় মাপের নার্সিংহোম ‘সিল’ করে ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। রঘুনাথপুর ২ ব্লক যুব তৃণমূলের অভিযোগ, ওই সংস্থার নন্দুকার সিমেন্ট কারখানা ঘিরেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৭ ০৭:০০
Share: Save:

কারখানা তৈরির করার সময়ে সরকারি খাস জমি দখল করার অভিযোগ উঠল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়া রঘুনাথপুরের চিটফান্ড সংস্থারটির বিরুদ্ধে।

বুধবার রঘুনাথপুর ২ ব্লকের যুব তৃণমূল নেতৃত্ব এই অভিযোগ তুলেছেন। সরকারি জমি বেদখলের অভিযোগ এ দিন রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন বিভাগের (ডিরেক্টরেট অফ ইকনমিকাল অফেন্স) কাছে লিখিত আকারে পাঠিয়েছেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি স্বপন মেহেতা। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কাছেও এই বিষয়ে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রঘুনাথপুর ও আদ্রায় দিনভর তদন্ত করে ‘শ্বাশত গ্রুপ অফ ইন্ড্রাস্ট্রিজ’ নামের পুরুলিয়ার এই বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার এই এলাকার ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ডিইও। রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নন্দুকা গ্রামের সংস্থার সিমেন্ট ও ছাই ইট কারখানা,আদ্রার বড় মাপের নার্সিংহোম ‘সিল’ করে ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। রঘুনাথপুর ২ ব্লক যুব তৃণমূলের অভিযোগ, ওই সংস্থার নন্দুকার সিমেন্ট কারখানা ঘিরেই।

আর্থিক অপরাধ দমন শাখার কাছে স্বপনবাবু অভিযোগ করেছেন, বড়রা পঞ্চায়েতের নন্দুকা মৌজায় হাল প্লট নম্বর ২৫৫২ তথা সাবেক ১৬৬৭ প্লটে সাত একর সরকারি জমি রয়েছে। ওই লগ্নি সংস্থা সাত একর জমিই দীর্ঘদিন আগে দখল করে নিয়েছে। স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘নন্দুকা গ্রামের কাছে যে জমিতে শ্বাশত সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই রয়েছে সাত একর সরকারি জমি।”

তিনি জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে ওই সিমেন্ট কারখানা কোন জমিতে তৈরি হয়েছে তা জানতে তিনি ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে তথ্য জানার অধিকার আইনের ভিত্তিতে আবেদন করেছিলেন। সেই সময়ে ব্লক ভূমি দফতর থেকে পাওয়া তথ্যেই পরিষ্কার, ওই অর্থ লগ্নি সংস্থাটি কারখানা তৈরির সময়েই সরকারি জমি দখল করে নিয়েছিল।

স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘কারখানা তৈরির সময়ে রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। সিপিএমের কোনও নেতার সাহায্যে সরকারি জমি দখল করে কারখানা তৈরি করেছিল ওই সংস্থা। সেই বিষয়ে তদন্ত করতে আর্থিক অপরাধ দমন শাখার কাছে অনুরোধ করেছি।” তবে তাঁদের মদতে ওই সংস্থা সরকারি জমি দখল করেছে, এমন অভিযোগ স্বভাবতই মানতে চাননি সিপিএমের স্থানীয় নেতারা।

এত দিন কেন তিনি অভিযোগ করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘আগেই ওই জমি নিয়ে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। কিছু হয়নি।’’ মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) দেবময় চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পরে ওই জমি নিয়ে অভিযোগ আসেনি। তবে এ বার তদন্ত হবে।’’

ডিইও সূত্রেও জানা গিয়েছে, শ্বাশত গ্রুপ অফ ইন্ড্রাস্ট্রিজের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেই তদন্তে তাঁরা ক্ষান্ত হতে চাইছেন না। ওই সংস্থা আরও কী ধরনের বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত, সবটাই আতস কাচের নীচে রেখে তদন্ত করা হবে। সরকারি জমি দখলের অভিযোগও তদন্তের মধ্যে থাকছে।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার আদ্রা ও রঘুনাথপুর থেকে ধৃত সংস্থার দুই ডিরেক্টর প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও মানস দাঁকে বুধবার কলকাতার আলিপুর আদালতের তৃতীয় কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ইন্দ্রনীল অধিকারীর এজলাসে তোলা হয়।

ডিইও তদন্তের স্বার্থে ও ওই সংস্থাটির বিষয়ে আরও তথ্য জানতে ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল। কিন্তু ধৃতদের পক্ষে এ দিন কোনও আইনজীবী না থাকায় ডিইও-র আবেদনের শুনানি হয়নি।

মানসবাবু ও প্রশান্তবাবু দু’জনকেই জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে ফের ডিইও-র আবেদনের শুননি হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Land Grabbing Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE