কল্পনাদেবীর দান করা জমি পড়ে রয়েছে এ ভাবেই। —ফাইল চিত্র
কেতিকা এলাকায় কল্পনা চৌধুরীর জমিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন গড়ে তোলা নিয়ে সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিককে তলব করেছিল আদালত। মঙ্গলবার ছিল সেই হাজিরার দিন। কল্পনাদেবীর আইনজীবী সৌগত মিত্র জানান, ভবনের নকশা ও খসড়া হিসেব নিয়ে এ দিন প্রকল্প আধিকারিক প্রদীপ পতি বিচারক অশোককুমার দাস অধিকারীর এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। প্রদীপবাবু এ দিন আদালতকে জানান, স্কুল ভবন গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যেই ১৫ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরকে নকশাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিন বিচারক তাঁকে বিদ্যালয় নির্মাণের সামগ্রিক দিকটি দেখভাল করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, অবিলম্বে বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতিকেও।
সৌগতবাবু জানান, ১৯৯০ সালে পুরুলিয়া শহরের কেতিকা এলাকার বাসিন্দা কল্পনা চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য পুরুলিয়া পুরসভাকে ৩৭০০ বর্গফুট জমি দান করেছিলেন। কল্পনাদেবীর স্বামী ত্রিলোচন চৌধুরী বলেন, ‘‘এলাকার প্রাথমিক স্কুলটি স্থানীয় দুর্গামণ্ডপে চলে। তাই স্থায়ী বাড়ি তৈরির জন্য জমি দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় পুরুলিয়ার পুরপ্রধান ছিলেন কৃষ্ণপদ বিশ্বাস। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন আমদের দেওয়া জমিতে স্কুলবাড়ি তৈরি হবে। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতেই জগন্নাথ কিশোর কলেজের সামনে আমাদের জমিটি পুরুসভার হাতে তুলে দিই।’’
টানা পঁচিশ বছর সেই জমি ঠিক তেমনই পড়ে রয়েছে। আজও তৈরি হয়নি স্কুল বাড়ি। কল্পনাদেবীর অভিযোগ, জমি দান করা স্বত্ত্বেও কেন স্কুলবাড়ি তৈরি হল না, বছরের পর বছর পুরসভা এবং জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাছে ঘুরে ঘুরেও সেই প্রশ্নের সদুত্তর পাননি তিনি। অবশেষে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ তিনি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন।
কল্পনাদেবীর আইনজীবী সৌগত মিত্র জানান, ২০১৩ সালের অাগস্টে পুরসভার তরফে তাঁকে জানানো হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের অনুমতি না পেলে তাঁদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। তারপরই মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। বর্তমানে সেই মামলার শুনানি চলছে। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক গত এপ্রিলে জমিটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরকে হস্তান্তরও করেছে।
সৌগতবাবু জানান, জমি হস্তান্তরের পরে আদালত রাজ্য শিক্ষা দফতরের সচিবকে ১০ দিনের মধ্যে স্কুল বাড়ি গড়ে তোলার জন্য অর্থ বরাদ্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশের পরে গত ৬ মে শিক্ষা দফতরের সচিব পুরুলিয়ার জেলাশাসককে অর্থ বরাদ্দ করার জন্য অনুরোধ করেন। কেন না, পদাধিকার বলে জেলাশাসক জেলা সবর্শিক্ষা মিশন প্রকল্পের অধিকর্তা। পাশাপাশি আদালত স্কুল ভবন গড়ে তোলার জন্য নকশা ও খসড়া (প্ল্যান ও এস্টিমেট) সমেত জেলা সবর্শিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এদিন ফোনে জেলা সবর্শিক্ষা মিশন প্রকল্পের প্রকল্প আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতি হেমন্ত রজক বলেন, ‘‘আমি এখনও আদালতের নির্দেশ পাইনি। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ আমাকে একটি নকশা দিয়েছে। সেই নকশা সমতল জমির নকশা। কিন্তু এই জমিটি পুকুর সংলগ্ন নিচু জমি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy