শূন্য পদে নিয়োগ সম্পর্কে তাঁকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে পুরসভার কার্যবিবরণী ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া পুরসভায় শনিবার সন্ধ্যার ঘটনা।
শনিবার দুপুরে পুরসভার বোর্ড মিটিং ছিল। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও অফিস সুপারিন্টেন্ডেন্টের চারটি শূন্য পদে লোক নিয়োগ করা হবে পুরসভায়। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বৈঠকে সেই প্যানেল অনুমোদনের জন্য আনা হয়েছিল। কিন্তু, প্যানেল অনুমোদন দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করেই ঝামেলার সূত্রপাত। উপ-পুরপ্রধান সামিমদাদ খান নিয়োগের এই প্যানেল বৈঠকে পেশ করে অনুমোদন চান। বিধি অনুযায়ী, নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেল পুরবোর্ডের অনুমোদন পেলে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠাতে হয়। সূত্রের খবর, তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু মাহালি-সহ আরও কয়েক জন বলেন এই নিয়োগের বিষয়ে কাউন্সিলরেরা অনেকেই কিছুই জানেন না। উপ-পুরপ্রধান তাঁদের জানান, যা হয়েছে পুর দফতরের বিধি মেনেই হয়েছে।
কিন্তু সে কথা কৃষ্ণেন্দুবাবুরা শুনতে চাননি। তৃণমূলের আট কাউন্সিলর বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেন। সে সময় পুরপ্রধান কে পি সিংহদেও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। ওয়াকআউটের খবর পেয়ে পুরপ্রধান তড়িঘড়ি পুরসভায় আসেন। এর পরে বেরিয়ে যাওয়া সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুরসভা সত্রে জানা গিয়েছে, যে আট কাউন্সিলর বেরিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছ’জন ফিরে এসে কার্যবিবরণীতে সই করেন। নিয়োগের প্যানেলটি পুরবোর্ডে পাশও হয়ে যায়।
অভিযোগ, কৃষ্ণেন্দুবাবু সন্ধ্যায় পুরসভায় এসে কর্মীদের কাছে কার্যবিবরণী দেখতে চান। হাতে নিয়ে তিনি তা ছিঁড়ে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুরপ্রধানকে জানানো হয়। ক্ষুব্ধ পুরপ্রধান দলের কিছু কর্মী এবং কাউন্সিলরকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়ে পুরো ঘটনা জানান। পরে কে পি সিংহদেও বলেন, ‘‘চারটি শূন্য পদে নিয়োগের সমস্ত প্রক্রিয়া বিধি মেনেই হয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে দফতরের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে ও তাঁদের নির্দেশ মোতাবেক। সেই প্যানেলটি বোর্ড মিটিংয়ে পাশ করার পরে পুর দফতরে পাঠানোর কথা। সেই কারনেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। দু’জন কাউন্সিলর বাদে সকলেই সই করেছেন। পরে শুনলাম কৃষ্ণেন্দু মাহালি কার্যবিবরণীর পাতা ছিঁড়ে দিয়েছেন।’’ এটা কী ধরনের আচরণ, প্রশ্ন তুলেছেন পুরপ্রধান।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এর পর পুরপ্রধান গোটা ঘটনাটি দলের শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সীকে জানান। রাজ্য নেতৃত্ব পুরপ্রধানকেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
কৃষ্ণেন্দুবাবুর অবশ্য দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে অহেতুক এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। শনিবার হওয়ায় পুরসভা সন্ধ্যার আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ‘‘তা হলে আমি কী ভাবে সন্ধ্যায় গিয়ে কার্যবিবরণী ছিঁড়তে পারি।’’—প্রশ্ন এই কাউন্সিলরের। তাঁর বক্তব্য, এই নিয়োগ বিধি মেনে হচ্ছে কিনা বা কেন আমাদের জানানো হয়নি, এ সব নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলায় এখন তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy