Advertisement
১৮ মে ২০২৪
চিকিৎসক নিগ্রহের জের
Doctors Harassed

নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে তালাবন্ধ কাষ্ঠগড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র

 

 

 

স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ। শুক্রবার ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ। শুক্রবার ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৩ ০৮:২৫
Share: Save:

এক চিকিৎসক এবং নার্সকে মারধরের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে রামপুরহাটের কাষ্ঠগড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজ বন্ধ করলেন বাকি চিকিৎসক এবং কর্মীরা। ফলে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই কার্যত তালাবন্ধ হয়ে রয়েছে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পরিষেবা না পেয়ে শুক্রবার ফিরে যেতে হল কাষ্ঠগড়া-সহ আশপাশের গ্রামের রোগীদের।

পুলিশ অবশ্য চিকিৎসক ও নার্সকে মারধরের ঘটনায় মারফত খান ও ফরিদ খান নামে কাষ্ঠগড়া গ্রামের দুই বাসিন্দাকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে আটকে রেখে সরকারি কাজে বাধা, গালিগালাজ করে মিলিত ভাবে মারধর সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে। ধৃতদের এ দিন রামপুরহাট আদালাতে হাজির করানো হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার রাতে এক রোগীর চিকিৎসা নিয়ে দেখা নিয়ে রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে কাষ্ঠগড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃণাল মণ্ডলের বচসা হয়। অভিযোগ, চিকিৎসকের উপরে চড়াও হন রোগীর আত্মীয় ও গ্রামবাসীদের একাংশ। তপতী দাস নামে এক জন নার্সিং স্টাফকেও নিগৃহীত করা হয় বলে অভিযোগ। নিগৃহীত চিকিৎসককে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, ওই চিকিৎসক চিকিৎসা করার আগে রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনদের ছবি মোবাইলে তুলছিল। এই নিয়ে বচসা বাধলে চিকিৎসক চেয়ার তুলে মারতে উদ্যত হন। তাতে এক জনের আঙুলে আঘাত লাগে। রামপুরহাট ১-এর বিএমওএইচ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ওই চিকিৎসক নিজেকে বাঁচাতে টেবিলের এক পাশে সরে গিয়েছিলেন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে কাষ্ঠগড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পরিষেবা যাতে পুনরায় চালু হয়, সে ব্যপারে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শোভন দে এবং বিএমওএইচ সপ্তর্ষি কীর্তনিয়া কাষ্ঠগড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স সহ অন্য কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে তাঁরা অনড়। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘কাষ্ঠগড়া হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসকের মধ্যে এক জনকে নিগৃহীত করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন। এক জন নার্সও নিগৃহীত হয়েছেন। এই অবস্থায় হাসপাতালের অন্য এক জন চিকিৎসক সহ বাকি নার্সিং স্টাফেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’’ তিনি জানান, স্বাস্থ্যকর্মীরা ওখানে কাজ করতে চাইছেন না। সে বিষয়ে তাঁরা লিখিত ভাবে তাঁকে জানিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

চিকিৎসকদের সংগঠনও ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সভাপতি দুর্গাপ্রসাদ চক্রবর্তী ও সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘চিকিৎসক মৃণাল মণ্ডলের উপরে হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো ব্যবস্থার উন্নতি, নিরাপত্তা কর্মী সহ সর্বস্তরে লোকবল বাড়ানোর দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসন দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE