মাটির নীচ থেকে নির্বিচারে জল তোলার ফলে কী ভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে একটি আস্ত জনপদ, জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে তা দেখলেন শুকনো জেলা পুরুলিয়ার পড়ুয়ারা। ২২ অগস্ট থেকে পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে শুরু হয়েছে বিজ্ঞান চলচ্চিত্র উৎসব। চলবে আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত। উদ্যোক্তা কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের ‘বিজ্ঞান প্রসার’ এবং সংস্কৃতি মন্ত্রকের আওতাধীন ভারতীয় বিজ্ঞান সংগ্রহালয়। জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বইতে বিজ্ঞান চলচ্চিত্র উৎসবে যে সমস্ত ছবি দেখানো হয়েছিল, তারই কয়েকটি নিয়ে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত চলচ্চিত্র দেখানো হবে স্কুলের পড়ুয়াদের।
বি়জ্ঞান কেন্দ্রের শিক্ষা সহায়ক কৌশিক ধর জানান, উৎসবে দেখানো হয়েছে ‘ডিজিডব্লুটি: এ কজ ফর কনসার্ন’ নামে একটি তথ্যচিত্র। সেই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে, তেলেঙ্গানার পাহাড়ের কোলে সবুজে ঘেরা একটি জনপদ কাবালান্ডে কী ভাবে শুকিয়ে গিয়েছে মাইলের পর মাইল জুড়ে। কোথাও জল নেই। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দার জীবিকা ছিল চাষাবাদ। জলের অভাবে সেই পেশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। আর এই সমস্তটাই হয়েছে মাটির নীচ থেকে নির্বিচারে জল তোলার ফলে।
দেখানো হয়েছে ‘নাগাল্যান্ড ইজ চেঞ্জিং’ নামে একটি তথ্যচিত্র। কৌশিকবাবু জানান, ঝুমচাষ করার ফলে নাগাল্যান্ডের একটি এলাকায় কী সমস্যা হয়েছিল তা নিয়েই এই ছবি। সেখানে দেখানো হয়েছে, নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে গ্রামবাসীরা কী ভাবে প্রকৃতির সঙ্গে আরও নিবিঢ় যোগাযোগ গড়ে তোলেন। গাছকে ভালবাসতে শেখেন নতুন করে।
‘বিজ্ঞান কি বরদান’ নামে একটি হিন্দি তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছে, ওড়িশার কালাহান্ডির একটি গ্রামের কথা। সেখানে স্বাধীনতার অনেক বছর পরেও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিকল্প শক্তির উৎসগুলিকে কাজে লাগিয়ে গ্রামটিতে আলো জ্বেলেছিল। এ ছাড়াও উৎসবে দেখানো হয়েছে ‘সুঝ-বুঝসে সংশোধন’, ‘বার্ডস অব নরসিংহ তলাও’, ‘কোরবা: এ সিটি ইন পেরিল’, ‘সিফটিং টাইডস’-সহ বেশ কিছু তথ্যচিত্র।
জেলা বি়জ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত প্রায় ১৪০০ পড়ুয়া এই উৎসবে যোগ দিয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের সায়ন্তন সাবুদ, শোভন কাঁড়ার, শুভম বাদ্যকর, দীপ্তায়ন শূরবৈদ্য, সৌভিক মাহাতোরা জানায়, পড়ার বইয়ের বাইরে পর্দায় নিজের চোখে বিষয়গুলি দেখতে পেরে অন্য রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের।
পড়ুয়াদের নিয়ে উৎসবে এসেছিলেন পুরুলিয়া রাজস্থান বিদ্যাপীঠের শিক্ষক চন্দ্রশেখর আজাদ, সুশীলকুমার সিংহরা। উদ্যোগটির প্রশংসা করেছেন তাঁরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy