Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Famous Bakul Tree Dying

মৃতপ্রায় বকুল গাছ, প্রশ্ন রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে

বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৪০-৫০ বছর আগে বিশ্বভারতীর তরফে বোলপুর সুপার মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি গাছ লাগানো হয়েছিল।

বকুল গাছ পরিদর্শনে বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা ও উদ্যান বিভাগের শিক্ষক ও আধিকারিকেরা।

বকুল গাছ পরিদর্শনে বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা ও উদ্যান বিভাগের শিক্ষক ও আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩৫
Share: Save:

বিশ্বভারতী বসিয়েছিল। তার পরে দীর্ঘ ৪০-৫০ বছর কেটে গিয়েছে। তার ছায়ায় অনেকে এসে বসতেন। চলত আড্ডা। হয়েছে রাজনৈতিক সভাও। গাছের নামে জায়গাটির পরিচিত হয়েছিল বকুলতলা বলে। কিন্তু কয়েক মাস ধরেই দেখা যাচ্ছিল সেই বকুল গাছটি ক্রমেই শুকিয়ে যাচ্ছে। সমাজমাধ্যমে এই খবর ছড়াতে সোমবার হাজির হন বিশ্বভারতীর উদ্যান ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, একটি বিশেষ ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে গাছটি মৃতপ্রায়। এটিকে বাঁচানো সম্ভব নয়। অভিযোগ, বিশ্বভারতীর তরফে ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাছটির এই দশা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বভারতী জানিয়েছে, ওখানে আরও একটি বকুল গাছ বসানো হয়েছে।

বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৪০-৫০ বছর আগে বিশ্বভারতীর তরফে বোলপুর সুপার মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি গাছ লাগানো হয়েছিল। যার মধ্যে অন্যতম ছিল এই বকুল গাছটি। ধীরে ধীরে বকুল গাছটি বেড়ে ওঠে। বকুলতলায় সকাল থেকে সন্ধ্যা অনেকে ভিড় করতেন। জায়গাটি বকুলতলা নামে পরিচিত হয়ে যায়। এই বকুলতলায় বহু রাজনৈতিক সভাও হয়েছে।

স্থানীয়েরা জানান, কয়েক মাস ধরেই গাছটি ক্রমেই শুকিয়ে যাচ্ছিল। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গাছটির ঠিকমতো যত্ন নেয়নি বিশ্বভারতী। তাই এই পরিণতি। স্থানীয় ব্যবসায়ী রবীন্দ্রনাথ দাস, গৌরাঙ্গ মিস্ত্রিরা বলেন, “দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে এই গাছ আমরা দেখে আসছি। বহু মানুষ ও পাখিদের আশ্রয়স্থল ছিল গাছটি। গাছটির এমন পরিণতিতে আমরাও মর্মাহত।” স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, শুভাশিস দাসেরা বলেন, “বোলপুর প্রাণকেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ ছিল এই গাছটি। গাছটির ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় আমরা মর্মাহত।” পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তও বলেন, “এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে সবুজ রক্ষার ব্যাপারে বিশ্বভারতী অনীহা রয়েছে। ঠিকমতো পরিচর্যা না হওয়ার কারণেই এই পরিণতি ঘটেছে ওই বৃক্ষটির।”

এ দিন বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা ও উদ্যান বিভাগের শিক্ষক ও আধিকারিকদের ১০ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা জানান, গাছটিতে ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। যার ফলে গাছটিকে আর বাঁচানো সম্ভব নয়। বিশ্বভারতীর পল্লীশিক্ষা ভবনের উদ্ভিদরোগ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ভোলানাথ মণ্ডল বলেন, “তিন মাস আগেই গাছটি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে আমরা দেখেছিলাম গাছের বিভিন্ন জায়গায় সংক্রমণ হয়েছে। সেখান থেকে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে দেখেছি গাছটিতে ‘গ্যানোডার্মা লুসিডাম’ ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত। এর ফলে, গাছের জল সংবহনের ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত জ়াইলেম কলা নষ্ট হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে গাছটি মারা যায়। তখনই গাছটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আজ গাছটিকে বোঝা যাচ্ছে গাছটিকে আর বাঁচানো সম্ভব নয়। তাই আগেই বিকল্প একটি বকুলগাছ ওই জায়গায় রোপণ করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shantiniketan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE