সৃষ্টি: পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের মহিলা স্বনির্ভর দলের সদস্যেরা তৈরি করছেন এমনই হস্তশিল্প। নিজস্ব চিত্র
মাছের বাজারে ডাঁই করে পড়ে থাকে আঁশ। তা দেখে অনেকে নাক সিঁটকান। কিন্তু মাছের আঁশ দিয়েই তৈরি রংচঙে গয়না থেকে ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী লোকে সাধ করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের বেশ কয়েকটা মহিলা স্বনির্ভর দলের সদস্যদের তৈরি আঁশের জিনিসপত্র ইতিমধ্যেই এলাকায় নজর কেড়েছে। দামও সাধ্যের মধ্যে থাকায় বাজারেও তাঁরা ভাল সাড়া পাচ্ছেন বলে দাবি করছেন ওই মহিলারা। মহিলা সদস্যেদের মধ্যে রেখা বাদ্যকর, সন্তোষী বাউরি, ডলি বাদ্যকারেরা বলেন, ‘‘আমাদের তৈরি জিনিস ক্রেতাদের খুব মনে ঝরেছে। আমাদেরও হাতে টাকা আসছে।’’
রাজ্য সরকারের ‘আনন্দধারা’ প্রকল্পের মাধ্যমে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই মহিলারা এই কাজ শুরু করেছেন। জয়পুর ব্লকের ‘অপরাজিতা সঙ্ঘ সমবায় সমিতি লিমিটেড’-এর অধীনে থাকা বেশ কয়েকটি স্বনির্ভর দলের মহিলারা গত তিন মাস ধরে আঁশ থেকে কানের দুল, লকেট, মূর্তি-সহ ঘর সাজানোর রকমারি জিনিস তৈরি করছেন।
আঁশের এই রূপান্তর কী ভাবে করা হচ্ছে? তাঁরা জানান, এ কাজে দরকার ধৈর্য আর পরিশ্রমের। প্রথমে তাঁরা বাজার থেকে সামান্য টাকা দিয়ে মাছের আঁশ সংগ্রহ করেন। তার পরে সেই আঁশ নানা রকম রাসায়নিক দিয়ে ধুয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নেন। তার পরে প্রয়োজনমতো কেটে তাতে রং চড়িয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় একের পরে এক নকশা। কখনও পরপর আঁশ সাজিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন সামগ্রী। কয়েকজন সদস্য জানান, এক-একটি কানের দুল তৈরি করতে তাঁদের খরচ করতে হয় পাঁচ টাকা। আর সেই দুল ক্রেতারা হাসিমুখে কুড়ি থেকে পঁচিশ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
বিডিও (জয়পুর) বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘আমরা ওই মহিলাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলাম। আনন্দধারা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে একের পরে এক চোখধাঁধানো জিনিসপত্র তৈরি করে তাঁরা রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের সব রকমের সাহায্য করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy