বমাল: বগা গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক। নিজস্ব চিত্র
দু’দিনের ব্যবধানে আবার। শনিবার রাতে একটি ট্রাক আটক করে এবং শুক্রবার রাতে একটি বাড়িতে অভিযান দিয়ে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ।
শনিবার রাতে বেলিয়াতোড়ের কাছে সিআইডি ও পুলিশ একটি ট্রাক থেকে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করে। সিআইডির দাবি, ৬৬ প্যাকেট ডেটোনেটর, ২৫০ প্যাকেট জিলেটিন স্টিক, ২২৯ বস্তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ট্রাকচালককে। ট্রাকটি তেলঙ্গানা থেকে বীরভূমের দিকে যাচ্ছিল বলে সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ইঁদপুরের বগা গ্রামে সীতারাম মণ্ডলের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। জেলা পুলিশের দাবি, তাঁর বাড়ি থেকে ৮০০ ডিটোনেটর, ২৬ কিলোগ্রাম পাওয়ার জেল (জিলেটিন স্টিক) ও ১ কুইন্টাল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার হয়েছে। বেআইনি ভাবে বাড়িতে বিস্ফোরক মজুত করার অভিযোগে সীতারামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ধৃতকে খাতড়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। যদিও সীতারামের পরিবার দাবি করেছে, তাঁর পাথর খাদানের ব্যবসা রয়েছে। পাথর ভাঙার জন্য বিস্ফোরক রেখেছিলেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ জানিয়েছে, রাত ১১টা নাগাদ অভিযান চালানো হয় সীতারামের বাড়িতে। সেই সময়ে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। পুলিশের দাবি, একটি ফাঁকা ঘরে বিস্ফোরকগুলি রাখা ছিল। বুধবার রাতে শালতোড়ার কাস্তোড়ার বাসিন্দা সমিরুদ্দিন খাঁ-র গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করেছিল সিআইডি। সমিরুদ্দিনকে অবশ্য গ্রেফতার করা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধেও বেআইনি ভাবে বিস্ফোরক মজুত রাখার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
শালতোড়ার ঘটনার পরে তদন্তকারীদের একাংশ দাবি করেছিলেন, খাদানে পাথর ফাটানোর কাজে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়। সেই ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত রয়েছেন সমীরুদ্দিন। ইঁদপুরের ঘটনার পরে বিরোধীরা ভোটের সময়ে নিরাপত্তা নিয়ে সুর চড়িয়েছেন। বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “ক’দিনের ব্যবধানে জেলায় দু’দফায় এত বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়া মামুলি ব্যাপার নয়। আমাদের সন্দেহ, ভোটে রাজনৈতিক সন্ত্রাস চালানোর জন্য এই বিস্ফোরক জেলায় পাঠানো হচ্ছে।’’ যথাযথ তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
শালতোড়ার ঘটনায় অভিযুক্তের কোনও রাজনৈতিক যোগের কথা শোনা যায়নি। তবে ইঁদপুরের বাসিন্দা তথা বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক লক্ষ্মণ মণ্ডল বলছেন, “সীতারাম সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ওকে তৃণমূল করতে দেখা গিয়েছে।” যদিও সীতারামের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেছেন শাসকদলের নেতারা। তৃণমূলের ইঁদপুর ব্লক সভাপতি সৌমিত্র পতি বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধীরা এই সব ভিত্তিহীন কথা বলছেন।”
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “বাড়িতে কেন বিস্ফোরক জমিয়ে রাখা হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে বিস্ফোরকগুলি আসছে সেটিও খতিয়ে দেখছি আমরা।” সীতারামের জামাই আনন্দ কর দাবি করেছেন, বগা গ্রামে একটি পাথর খাদান চালান সীতারাম। তিনি বলেন, ‘‘নিজে খাদান চালান বলেই বিস্ফোরক বাড়িতে রাখা হয়। পাথর ভাঙার কাজে লাগে। অন্য কোনও কারণ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy