Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Kajal Sheikh

না শোধরালে ‘কাজল ঝড়’, কেষ্ট-সুরেই বিশ্বভারতীর বিদ্যুৎকে হুঁশিয়ারি বীরভূমের সেই কাজলের

গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঠিক যে ভাষায় বিদ্যুৎ সম্পর্কে মন্তব্য করতেন, তার সঙ্গে কাজলের মন্তব্যের মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই।

কাজল শেখ। ফাইল ছবি।

কাজল শেখ। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ২১:৩৪
Share: Save:

বিশ্বভারতীর ‘অবনমনের’ জন্য প্রাক্তন উপাচার্য, ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের দায়ী করেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে উপাচার্যকেই নিশানা করলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। উপাচার্যকে হুমকি দিয়ে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য কাজল বলেন, ‘‘না শোধরালে কাজল ঝড় উঠবে।’’ তৃণমূল নেতার ওই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপিও।

গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঠিক যে ভাষায় বিদ্যুৎ সম্পর্কে মন্তব্য করতেন, তার সঙ্গে কাজলের মন্তব্যের মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। ঘটনাচক্রে, অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বীরভূমের রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন কাজল। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দলের জেলা কোর কমিটিতেও ঠাঁই দিয়েছেন।

শনিবার বোলপুরের কঙ্কালীতলা এলাকায় একটি দলীয় সভায় বক্তৃতা করেন কাজল। সেই সভা থেকে উপাচার্যকে নানা বিষয়ে আক্রমণ করেন নানুরের তৃণমূল নেতা। ভাষণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মধ্যে জমি বিবাদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘‘নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ভুলভাল কথা বলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে দাঁড়ানোয় তাঁর নামেও কুৎসা রটানো হচ্ছে।’’

বিশ্বভারতীর অধঃপতনের জন্য বিদ্যুৎকেই দায়ী করেছেন কাজল। তিনি বলেন, ‘‘পৌষমেলা বন্ধ করে ঐতিহ্য নষ্ট করা হচ্ছে। আমরা তা হতে দিইনি। আমরা বিকল্প পৌষমেলা করেছি। সেটাকেও বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। পুঁথিগত বিদ্যা আপনি নিশ্চয়ই অর্জন করেছেন। সেই কারণেই হয়তো ওই পদে রয়েছেন। কিন্তু আপনি যা করছেন, যে ভাবে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য নষ্ট করছেন, কবিগুরুকে, অমর্ত্য সেনকে কালিমালিপ্ত করছেন, তা ঠিক হচ্ছে না।’’ এর পরেই হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এখনও সময় আছে, শুধরে যান। না হলে কাজল ঝড় উঠবে। আর জেনে রাখুন, আমি যেটা বলি, সেটা করে দেখাই।’’

কাজলের এই মম্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে জেলা বিজেপি। জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘আগে অনুব্রত যেমন কথা বলতেন, কাজলও তেমনই বলছেন। বিশ্বভারতী আগে সন্ত্রাস দেখেছে, এ বার কী হয়, সেটাই দেখার।’’

শিক্ষায় বিশ্বভারতীর ক্রম-অবনমন নিয়ে বিভিন্ন মহলে যথেষ্ট সমালোচিত বর্তমান উপাচার্য। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র‌্যাঙ্কিং (এনআইআরএফ) অনুযায়ী এক দশক আগে যে প্রতিষ্ঠান ১১ নম্বরে ছিল, গত কয়েক বছরে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শুধুই অবনমন ঘটেছে। ২০২২ সালে সেই প্রতিষ্ঠানের ঠাঁই ৯৮ নম্বরে। তা নিয়ে চর্চার মধ্যেই ‘অবনমনের’ দায়ভার অন্যদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুৎ। যার জন্য উপাচার্যকেও পাল্টা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।

বিশ্বভারতীর ‘মান পড়ে’ যাওয়া নিয়ে বিদ্যুৎকে কাঠগড়ায় তুলেছে জেলা তৃণমূলের একাংশও। তবে কাজল যে ভাষায় উপাচার্যকে আক্রমণ করেছেন, তা অনেকেই সমর্থন করছেন না। এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘কাজল শেখ ভুল কিছু বলেননি। উপাচার্য নিয়ে তাঁর মত একেবারে সঠিক। তবে মাথায় রাখা উচিত, তৃণমূল হুমকির রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kajal Sheikh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE