সৈনিক স্কুলে মঞ্চের মধ্যমণি দেশের সহকারী সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহা। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে পড়ার সময় ছাত্রবাসের দায়িত্বে থাকা হাউস মাস্টারকে না বলে পুরুলিয়া শহরে রাতের শোয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন। মেসে রান্না না হলেও মেসের কাকুরা বাড়ি থেকে খাবার বানিয়ে নিয়ে এসে খাইয়েছিলেন। সেদিনই প্রথম শিখেছিলেন, সহমর্মিতা কাকে বলে। বৃহস্পতিবার নিজের স্কুলে এসে স্কুল জীবনে ফেলে আসা এমন নানা স্মৃতিতে ডুবে গেলেন দেশের সহকারী সেনা প্রধান (ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ, প্ল্যানিং অ্যান্ড ফিনান্স) লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহা।
এ দিন রাঁচি থেকে জামশেদপুর যাওয়ার পথে কিছুক্ষণ কাটিয়ে গেলেন পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের ১৯৭৫-এর ব্যাচের প্রাক্তনী সুব্রত সাহা। ২০১২ সালে স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে এসেছিলেন কিছু সময়ের জন্য। তবে অনেক প্রাক্তনীর ভিড়ে সেবার স্কুলের মাটিকে সে ভাবে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ হয়নি। এ দিন বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে পুরুলিয়ায় এসে স্কুল ক্যাম্পাস ঘুরে শিক্ষকদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ক্যাডেটদের সঙ্গেও সময় কাটান জেনারেল সাহা। নিজের ছাত্রজীবনের স্মৃতি ভাগ করে নেন বর্তমানদের সঙ্গে।
তাঁর কথায়, ‘‘বাবা এক দিন আমাকে দেখতে এসে আমার চুলের ছাঁট দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তখন এখানে সেই ছাঁটকে বাটিছাঁট বলত।’’ এক দিন হাউস মাস্টারকে না বলে রাতের শোয়ে রাজেশ খন্নার সিনেমা দেখতে চলে গিয়েছিলেন, স্পষ্ট মনে আছে তাঁর। বলেন, ‘‘থাকতাম পটেল হাউসে। বালিশ আড়াআড়ি রেখে চাদর ঢাকা দিয়ে চলে গিয়েছিলাম। সে রাতে আর হস্টেলে ঢুকতে পারিনি, কিন্তু পরের দিন হাউস মাস্টারের কাছে ধরা পড়ে গিয়েছিলাম।’’ শিক্ষকদের কথাও মনে আছে জেনারেল সাহার। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকদের কাছ থেকে যা শিখেছি, আজও জীবনে তাকেই আদর্শ করে পথ চলছি। এই স্কুল এক জন ছাত্রকে শৃঙ্খলাপরায়ণ করে তোলে, সময়ানুবর্তিতা শেখায়।’’ বর্তমান ছাত্রেরা যাতে স্কুলের এই শিক্ষা গ্রহণ করে, সে জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করেন।
এ দিন তিনি একটি ট্রফি সৈনিক স্কুলের প্রিন্সিপাল কর্নেল রাহুল শর্মার হাতে তুলে দেন। স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতি বছর ড্রিলে যে ক্যাটেট সেরা পারফরম্যান্স করবে, তাকে এ বার থেকে এই ট্রফি তুলে দেওয়া হবে। এ দিন হাজির ছিলেন স্কুলের আর এক প্রাক্তনী, পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘জেনারেল সাহার থেকে আমি অনেক জুনিয়র। তবে নিজের পুরনো স্কুল তো। অনেক স্মৃতি ছড়িয়ে রয়েছে এই ক্যাম্পাসে। অনেক দিন পরে আসতে পেরে
ভাল লাগল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy