প্রতীকী ছবি।
প্রতিবেশি নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং নির্যাতিতা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লেও পিতৃত্ব অস্বীকার করার অপরাধে এক বিবাহিত যুবককে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল সিউড়ি জেলা আদালত। এই মামলায় অপরাধীর ডিএনএ টেস্ট করানো হয়।
শনিবার প্রশান্ত বাগদি নামে রাজনগরের ওই যুবকের বিরুদ্ধে এই সাজা শোনান সিউড়ি জেলা জজ পার্থসারথি সেন। এই খবর জানান মামলার সরকারি আইনজীবী সৈয়দ সমিদুল আলম। সমিদুল বলেন, ‘‘অত্যন্ত সংবেদনশীল এই মামলায় বিচারক শুধু দোষীর যাবজ্জীবন দেননি, নির্যাতিতাকে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অনাদায়ে আরও ২ বছর কারাবাস।’’ ভিকটিম কমপেনশেসন ফান্ড থেকে নির্যাতিতা ও তার সন্তানের জন্য ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, রাজনগরের অত্যন্ত গরিব পরিবারের ওই নাবালিকা প্রতিবেশির বাড়িতে নিয়মিত টিভি দেখতে যেত। দোষী সাব্যস্ত যুবকের মাকে মাসি বলত। সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করে বিবাহিত দুই সন্তানের বাবা প্রশান্ত বাগদি। সরকারি আইনজীবী বলছেন, ‘‘ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে কোনও এক সময়। এত পরিচিত একজন তার সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটানোয় ট্রমার মধ্য ছিল ওই নাবালিকা। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানা যায়। রাজনগর থানায় ২০১৫ সালের ৫ অগস্ট নির্যাতিতার পরিবার অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু, ওই মেয়েটি মানসিক ভাবে এতই খরাপ অবস্থার মধ্যে ছিল অভিযুক্তরে নাম বলতে পারেনি।’’
সমিদুল আলম জানাচ্ছেন, পক্সো ধারায় মামলা হয়েছিল। অভিযুক্তের খোঁজ পেতে সিউড়ির বিশেষ আদালতের নির্দেশে তখন ওই নির্যাতিতাকে সিউড়ির সরকারি হোমে রেখে বারবার কাউন্সেলিং করানো হয়। স্বাভাবিক হয়ে আদালতে এসে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার সময় অভিযুক্তের নাম জানায় সে। তার পরেই প্রশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে ক্রমাগত অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। নাবালিকা তার সন্তান ও অভিযুক্তের ডিএনএ টেস্টের পর প্রশান্তের পিতৃত্ব প্রমাণিত হয়। মোট ১৭ জন সাক্ষী ও ২৩টি নথির উপরে ভিত্তি করেই দোষী সাব্যস্ত হয় অভিযুক্ত।
সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘বিশেষ আদালতে বেশ কয়েক মাস বিচারক না থাকায় মাঝ পথে থমকে ছিল মামলাটি। অভিযুক্ত পক্ষ কলকাতায় উচ্চ আদালতে দ্রুত বিচার প্রার্থনা করে মামলা করে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য মামলাটি এর পরে আসে জেলা জজের কাছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy