দিকনির্দেশ: ভোটগণনার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। সোমবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
দিল্লির মসনদে বসছে কে—ভোটগণনার আগে তার আভাস পেতে রবিবার রাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বুথ-ফেরত সমীক্ষার দিকে নজর রেখেছিলেন রাজনৈতিক নেতা, কর্মী থেকে আমজনতা।
সব সমীক্ষারই ফলাফল, এ বার সরকার গড়তে পারে এনডিএ-ই। রাজ্য অনেক বেশি আসন পেতে পারে বিজেপি।
কতটা সত্যি হতে পারে সমীক্ষার ফলাফল, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল রবিবার রাত থেকেই। সোমবার দিনভর তা নিয়েই আলোচনা চলে জেলার রাজনৈতিক শিবির থেকে পাড়ার ঠেকে। বুথ-ফেরত সমীক্ষায় সরকার গঠনের দৌড়ে এনডিএ-কে এগিয়ে রাখায় বিজেপি শিবির যতই উৎফুল্ল হোক না কেন, বাম ও তৃণমূল ওই সব সমীক্ষাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুকে ‘পদ্ম ফুটবে’ এবিপি নিউজ-নিয়েলসেনের বুথ-ফেরত সমীক্ষা তেমন ইঙ্গিত না দিলেও রাজ্যের ৪২টির মধ্যে তৃণমূল ২৪, বিজেপি ১৬টি আসন পেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে। টাইমস নাও-ভিএমআর ও ইন্ডিয়া টুডে অ্যাক্সিস পোল বলছে, এ রাজ্যে বিজেপি পেতে পারে ১১টি আসন।
রিপাবলিক-সি ভোটার বলেছে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি পেতে পারে ১৯-২৩ আসন। আসন কমবে তৃণমূলের। কংগ্রেস সীমিত থাকবে ২টি বা ১টি আসনে। একটিমাত্র বুথ-ফেরত সমীক্ষা ছড়া অন্যগুলিতে উঠে এসেছে, বামফ্রন্ট সম্ভবত কোনও আসন পাচ্ছে না।
ওই সমীক্ষা দেখে উৎসাহিত জেলা বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলছেন, ‘‘বুথ-ফেরত সমীক্ষায় স্পষ্ট ইঙ্গিত না দিলেও বীরভূম আসন জেতার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। ভোটগণনার দিন সেটা দেখতে পাবেন।’’
অন্য দিকে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘২০১৬ সালে বুথ-ফেরত সমীক্ষা বলেছিল বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে কংগ্রেস-বাম জোট সরকারে গড়ছে। মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের থেকেও বেশি আসন পেয়েছে তৃণমূল।’’ অভিজিৎবাবুর সংযোজন, ‘‘তাই এ সব সমীক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও মানে নেই। জেলার দু’টি আসনে তো বটেই, গোটা রাজ্যে উন্নয়নে ভর করেই জয়ী হবে তৃণমূল।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই সংবাদমাধ্যম প্রচার করছে এ রাজ্যে তৃণমূল আর বিজেপি ছাড়া কিছুই নেই। বুথ-ফেরত সমীক্ষায় সেটাই উঠে এসেছে। বামেরা একেবারেই হারিয়ে গিয়েছে বলে যতই প্রচার করা হোক, তা মোটেই সত্যি নয়। বামেদের অস্তিত্ব আছে, থাকবে। জেতার ব্যপারেও আশাবাদী।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে তৃণমূল ও বাম নেতাদের আশ্বাসে খুব যে ভরসা রাখতে পারছেন দলের কর্মীরা, এমন নয়। তাঁদের কথায়— ‘‘দেশে এমনকী বিদেশেও বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত যে সব সময় মেলে, তেমন নয়। এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই ধরনের সমীক্ষায় মোটের উপর ভোটারের মনের একটি আভাস পাওয়া যায়। সকলে টিভিতে চোখ রেখেছিলাম।’’
মাস কয়েক আগে দেশের পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের সঙ্গে বুথ-ফেরত সমীক্ষা মিলেছিল অনেকটাই। তাঁদের চিন্তা সেখানেই। অনেকেই বলছেন, ‘‘বিশেষ করে এ বার এ রাজ্যে যে ভাবে মেরুকরণের ভোট হয়েছে, তাতে বুথ-ফেরত সমীক্ষা দিয়ে আঁচ করা তত সহজ নয়। কিন্তু সত্যিই যদি সেটা মেলে সেটা যথেষ্ট উদ্বেগের। কারণ, তা হলে হিংসা-হানাহানি শুরু হবে ফল ঘোষণার পর থেকেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy