প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে না পারায় একটি চাল বোঝাই গাড়ি আটক করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে ওই চাল রেশনের। রবিবার বলরামপুর-বাঘমুণ্ডি রাস্তায় বলরামপুর থানা এলাকার রসুলডি গ্রামের কাছে গাড়িটি আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ২৯ কুইন্টাল চাল আটক হয়েছে। গাড়ির মালিক বলরাম গড়াই ও চালক জয়পাল মুড়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনেই বাঘমুণ্ডির বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার দুর্নীতি দমন শাখার কাছে খবর ছিল বাঘমুণ্ডি এলাকা থেকে রেশনের চাল পাচার হচ্ছে। তার ভিত্তিতে রবিবার পুলিশ ওঁত পেতে ছিল। বিকেলের পরে বাঘমুণ্ডির দিক থেকে বলরামপুরের দিকে আসছিল গাড়িটি। চালের বস্তা বোঝাই দেখে সেটিকে থামানো হয়। পুলিশের দাবি, চাল কোথা থেকে আনা হচ্ছে এবং কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তা জানতে চাওয়া হলে কোন সদুত্তর মেলেনি। এমনকী চালের বস্তাগুলির কোনও নথিও ছিল না। দুর্নীতি দমন শাখার ডিএসপি গোপাল গোস্বামীর দাবি, ওই চাল যে রেশনের, ধৃতেরা তা স্বীকার করেছে। তবে ডিলারের কাছে যে বস্তায় চাল যায়, তাতে ছিল না। অন্য বস্তায় স্থানান্তর করে পাচার করা হচ্ছিল বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। চালের বস্তাগুলি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। গোটা বিষয়টি জেলা খাদ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের জেল হাজতে পাঠান।
রেশনের খাদ্যপণ্য পাচার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। তিনি বাঘমুণ্ডিরই বিধায়ক। নেপালবাবু বলেন, ‘‘গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ খাদ্যপণ্যের একটা অংশ যে পাচার হচ্ছে সেই অভিযোগ আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই তুলছি। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পাচারের সময়ে চাল ধরা পড়েছে। এর পিছনে কার বা কাদের হাত রয়েছে তা জানা যাচ্ছে না। মানুষ সেটাই জানতে চায়।’’ ওই চাল কোথা থেকে আসছিল, কারা পাচার করছিল, সেই সমস্ত তদন্ত করে বার করুক খাদ্য দফতর, দাবি নেপালবাবুর। ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক প্রভাশিসলাল সিংহ দেও বলেন, ‘‘আমরাও চাই তদন্ত হোক। এটা মিড-ডে মিলের চালও হতে পারে। যদি তদন্তে প্রমাণিত হয়ে যে এগুলো রেশনেরই, তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’
এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তও শুরু হয়েছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে জেলার সহকারী খাদ্য নিয়ামক নির্মল নাথ বলেন, ‘‘এই ঘটনা নিয়ে আমাদের কাছে কোন খবর নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy