কমিটির মিছিল। —নিজস্ব চিত্র
জমি ফেরতের দাবি প্রসঙ্গে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করছে, তা জানতে চেয়ে স্মারকলিপি দিল কৃষি কমিটি। শুক্রবার সেই প্রশ্ন-সহ আরও ছয় দফা দাবিতে রঘুনাথপুর মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে রঘুনাথপুর অঞ্চলের কৃষি কমিটি। তবে অনেকেই মনে করছেন, শাসকদলের বিধায়ক নতুনডিতে গিয়ে কৃষি কমিটি-সহ সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক করার পরে কমিটিতে কিছুটা হলেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ দিনের কর্মসূচিতে দেখা যায়নি কমিটির পূর্বতন সম্পাদক বাণেশ্বর গঙ্গোপাধ্যায় এবং বেশ কিছু সক্রিয় কর্মীকে। শুক্রবারের গণ ডেপুটেশনে বড় জমায়েত হবে বলে কর্মকর্তারা আগে দাবি করলেও বাস্তবে বেশি ভিড় হয়নি। কমিটির নেতাদের একাংশের অভিযোগ, বিধায়ক এলাকায় গিয়ে বৈঠকের নামে তাঁদের আন্দোলন ভাঙতে চাইছেন। তবে রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি এ দিন বলেন, ‘‘অধিগৃহীত জমিতে শিল্প গড়ার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হয়েছেন। রাজ্য সরকার সেখানে ভারী শিল্প গড়তে চায়। এলাকায় গিয়ে চাষিদের সেই বিষয়টি বোঝানোর পরে জমিদাতাদের একটা বড় অংশ রাজ্য সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তাঁরা কমিটির অনৈতিক দাবি থেকে সরে এসেছেন।’’
বাম আমলে ২০০৭-২০১১ সালে রঘুনাথপুর ১ ব্লকে শিল্পতালুকের জন্য মোট ১৮৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার। ন’ বছরেও সেখানে কোনও শিল্প গড়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরে জমি ফেরতের নির্দেশ দেওয়ার পরেই রঘুনাথপুরেও জমি ফেরতের দাবি জোরাল হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ রঘুনাথপুর ১ ব্লক কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়ে রঘুনাথপুর পুরসভা পর্যন্ত মিছিল করেন কমিটির জনা তিরিশ সদস্য। পুরসভার সামনে তে-মাথার মোড়ে একটি পথসভা করা হয়। সেখানে দাবি উঠে, অবিলম্বে ভারী শিল্প না হলে প্রশাসনকে কৃষকদের জমি ফেরত দিতে হবে। কমিটির সম্পাদক মণিলাল মাজি বলেন, ‘‘ভারী শিল্প গড়ার জন্য ন’ বছর আগে জমি দেওয়ার পরেও নতুনডি এলাকায় কোনও শিল্পই হয়নি। কারখানা হলে কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করে কৃষকেরা জমি দিয়েছিলেন। কিন্তু কর্মসংস্থানও হয়নি, অধিগৃহীত জমিতে চাষও করা যাচ্ছে না।’’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, এলাকার কৃষকেরা শিল্পায়নের বিরুদ্ধে নন। মনিলালবাবু জানান, অধিগ্রহণ বাতিল করে, জমি ফেরত দিয়ে বর্ধিত হারে ক্ষতিপূরণ-সহ নতুন করে যদি জমি নেওয়া হয়, তাহলে তাঁদের আপত্তি নেইই। তাঁদের দাবি, অধিগৃহীত জমিতে শিল্প না হওয়া পর্যন্ত সিঙ্গুরের ধাঁচে জমিহারাদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে, কমিটির দাবিগুলি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।
জমি ফেরতের দাবি সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায়। তবে এলাকায় ভারী শিল্প গড়ার বিষয়ে কমিটির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গত মাসে পুরুলিয়াতে পর্যালোচনা বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে জানিয়েছেন, রঘুনাথপুরে শিল্পায়নের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। কেন্দ্র সরকারের ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোরের মধ্যে রঘুনাথপুর থাকছে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যই এ দিন কমিটির সদস্যদের জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy