মোকাবিলা: রামপুরহাট হাসপাতাল চত্বরে কামান হাতে কর্মীরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
নিকাশি নালার জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। আশপাশের কাঁটাগুল্ম গাছের জঙ্গলের চারপাশেও ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঘুরছে। এমনই পরিবেশে মশা দমনে কামান দাগল পুরসভা। ওড়াল ধোঁয়া।
রবিবার রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার রামপুরহাট জেলা হাসপাতালের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন করতে নিকাশি নালার জমা জলেই ছড়ানো হল ব্লিচিং। মশা দমনে প্রতিষেধক স্প্রে করা হল। আগাছাপূর্ণ জঙ্গলেই পুরসভা থেকে নতুন কেনা মশা মারার জায়ান্ট কামানের মাধ্যমে মশানিধন যঞ্জে প্রতিষেধক ধোঁয়া ওড়ানো হল। পুরসভার এই কর্মযজ্ঞে সামিল ছিল ৬০ জন অস্থায়ী শ্রমিক। তাঁদের প্রত্যেকের গায়ে জড়ানো ছিল রামপুরহাট পুরসভা লেখা জ্যাকেট। উপস্থিত ছিলেন উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকার, পুরসভার স্যানিটরি ইন্সপেক্টর সুষেন মণ্ডল, সাব অ্যাসিস্টান্ট ইঞ্জিনিয়র ডাল্টন চট্টোপাধ্যায় সহ পুরসভার কয়েক জন কর্মী। সকাল দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত চলে অভিযান।
উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকার জানান, রামপুরহাট হাসপাতাল সহ শহরের পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পুরসভা বদ্ধপরিকর। তারই অঙ্গ হিসাবে হাসপাতালের চত্বরের বাইরে ব্লিচিং ছড়ানো থেকে মশা নিধনের জন্য প্রতিষেধক স্প্রে থেকে ধোঁয়া ওড়ানো হয়।
পুরবাসী থেকে শুরু করে হাসপাতালে থাকা রোগীর পরিজনদের অনেকেরই মনে হয়েছে, এত কিছুর পরেও তাতে কাজের কাজ হল কি? কেননা যেখানে কামান দাগা হল সেখানে নিকাশি নালা সহ ফাঁকা জমিতে জল জমে আছে। ঝোপ-জঙ্গল সাফাই না করে সেখানে ব্লিচিং, প্রতিষেধক স্প্রে করেই বা কি হবে? অনেকে একে টাকার অপচয় বলে মনে করছেন। সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালের ভিতরে পরিষ্কার করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। চত্বরের বাইরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করছে পুরসভা। সে জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।’’ তা জারি থাকবে বলেও সুকান্তবাবু জানান। পুরসভা সূত্রের খবর, নতুন নিকাশি নালা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তবুও নিকাশি নালার জমা জল পরিস্কার করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হবে।
শুধুমাত্র রামপুরহাট হাসপাতালের নিকাশি নালাতেই জল জমে নেই। শহর ঘুরলে পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডেই নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটিতে ছোট বড় সমস্ত নালার জমা জলে মশার ডিম নজরে পড়বে বলে অনেকের অভিযোগ। আবার নালাগুলিতে প্লাস্টিক, নোংরা-আবর্জনা জমে থাকায় জমা জল সরতে চায় না। এলাকার বাসিন্দারা দ্রুত সে সব সংস্কারের দাবি তুলেছেন। শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিশাঁড়া পাড়ার এক বাসিন্দা জানালেন, বাড়ির কাছে নিকাশি নালাতে কত দিন ধরে জল জমে আছে। ডাস্টবিনের অভাবে নোংরা আবর্জনা পথেই পড়ে থাকছে। পচা গন্ধে টেকা যায় না। তাঁর কথায়, ‘‘যেখানে সব নালা, নর্দমা ঢেলে পরিস্কার করা জরুরি। সেখানে ময়লার উপরে ব্লিচিং আর স্প্রে করে অনর্থক টাকা খরচ করা হচ্ছে।’’
এ দিকে রামপুরহাট হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ৩ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩২ জনের রক্তে এনএস ১ পজিটিভ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে রামপুরহাট শহরের এখনও পর্যন্ত কেউ নেই বলে হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy