বিয়ের পর দিনই গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে মৃতু হল নতুন বরের। রবিবার রাতে মহম্মদবাজারের বসন্তপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম বঙ্কিম দাস (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার রাতেই ওই যুবকের বিয়ে হয়েছিল। রবিবার দুপুরে বৌভাতের পর্বও মিটে যায়। রাতে শখ করে নিজেই মাংস রান্না করছিলেন। হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার ভয়ে সকলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। একটু পরে সিলিন্ডারের আগুন নিভল কিনা দেখতে ঘরে ঢোকেন বঙ্কিম। সে সময়েই জ্বলন্ত সিলিন্ডারটি ফেটে যায়। সিলিন্ডারের টুকরো এসে লাগে বঙ্কিমের মাথায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার ময়না-তদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বসন্তপুরের বঙ্কিমের সঙ্গে কিছুদিন আগে বিয়ের ঠিক হয়, সাঁইথিয়া থানা এলাকার একটি গ্রামে। বিয়েতে নিমন্ত্রিতদের অনেকে চলে গেলেও কেউ কেউ থেকে যান। তাঁদের সকলকে নিয়ে আনন্দ করে রাতে মাংস ভাত খাওয়াবেন বলে ঠিক করেন বঙ্কিম। তাই ঘরে নিজেই মাংস রান্না করছিলেন। আর তখনই ঘটে যায় অঘটন। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছে, রান্না চলাকালীন কোনও ভাবে পাঁচ কেজির ওই গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সকলে দূরে সরে যান। কিছু ক্ষণ পর ওই জ্বলন্ত সিলিন্ডার ফেটে যায়। সিলিন্ডারের একটি টুকরো ছিটকে এসে প্রথমে পাকা দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে বঙ্কিমের মাথায় লাগে। এতে পাকা দেওয়ালের প্লাস্টার ফেটে যায়। বঙ্কিম সঙ্গে সঙ্গে লুটিয়ে পড়েন। মাটির দেওয়ালেও গর্ত হয়ে যায়। একটি ছোট টুকরো ছিটকে তাঁর দাদা শ্যামল দাসের ডান হাতে লাগে। এ দিন শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘আমার হাতে সামান্য লেগেছে। আগুন লাগে বড় বোনের গায়েও। তবে বোনের কিছু হয়নি। সব কিছু শেষ হয়ে গেল এক ধাক্কায়।’’
বঙ্কিমের মা মেনকাদেবী ছোট ছেলের মৃত্যুতে কার্যত বাক শক্তি হারিয়েছেন। শোকের ছায়া নেমেছে বসন্তপুর গ্রামে। একই অবস্থা বঙ্কিমের শ্বশুরবাড়িতেও। কিছু দিনের মধ্যেই নববধূকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে অষ্টমঙ্গলা করতে যাওয়ার কথা ছিল বঙ্কিমের। তার আগেই এই ঘটনায় বধূর পরিবার ভেঙে পড়েছে। বধূর বাবা বলেন, ‘‘জানি না কী অপরাধ করেছি! কেন এমন হল!’’ মৃতের স্ত্রী কোনও কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy