পুরুলিয়া শহরের অনতিদূরে অবস্থিত রায়বাঘিনী এলাকার বাঘেশ্বরী মন্দির। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
এসেছিলেন মন্দিরে মায়ের পুজো দিতে। পুজো দিয়ে বেরিয়েই চোখের সামনে নধর ছাগল। লোভ সামলাতে পারেননি। ‘আশীর্বাদে’ পাওয়া ছাগলকে কাঁচা ছোলার টোপ দিয়ে গাড়িতে তুলে চম্পট দিলেন দুই ‘ধার্মিক’ চোর! বুধবার পুরুলিয়ার রায়বাঘিনী এলাকার ঘটনা।
পুরুলিয়া শহরের অনতিদূরে অবস্থিত রায়বাঘিনী এলাকার বাঘেশ্বরী মন্দির। একেবারে ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই। প্রচলিত রয়েছে এই মন্দির প্রচণ্ড জাগ্রত। তাই সেখানে ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। যাতায়াতের পথে প্রায়ই বাইক, গাড়ি থামিয়ে প্রণাম করতে যান অনেকে। অনেকে আবার গাড়ির গতি কমিয়ে কয়েন ছুড়ে দেন মন্দির প্রাঙ্গণে।
একই রকম ভাবে বুধবারও মন্দিরের উল্টো দিকে একটি দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায় একটি গাড়ি। গাড়ি থেকে দু’জন নেমে এসে মন্দিরে যান। মন্দিরে প্রণাম করে বাইরে বেরিয়ে এসে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছাগল দেখতে পান তাঁরা। ছাগলকে কাঁচা ছোলা দেখাতেই ছাগল সেই ছোলা খেতে আসে। অভিযোগ, ছাগলটি কাছে আসতেই তাকে গাড়িতে তুলে পগারপার হয়ে যান ওই দুই ব্যক্তি। গাড়িটি চলে যেতেই বিষয়টি নজরে আসে মন্দিরের সামনে নলকূপ থেকে জল নিতে আসা স্থানীয়দের।
স্থানীয় বন্দনা রায় বলেন, ‘‘অনেকেই কাঁচা ছোলা এবং ফল গরু-ছাগলকে খেতে দেয়। তাই বিষয়টি নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়নি। গাড়িটি চলে যেতেই বিষয়টি জানাজানি হয়।’’
ছাগল চুরি নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই ছাগল মালিক পরাণ রায়ের। তিনি বলেন, ‘‘একটু নজর আড়াল হতেই যে চোর আস্ত ছাগল তুলে নিয়ে পালাবে তা ভাবতেই পারিনি।’’ যদিও তিনি এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।
মন্দিরে বাঘেশ্বরী মায়ের আশীর্বাদ নিতে এসেছিলেন চোর বাবাজীবনও। আর ‘প্রসাদ’ হিসাবে মন্দিরের ছাগলই চুরি করে পালিয়ে গেলেন। তবে ‘ধার্মিক’ চোরের এ হেন কাণ্ডে রায়বাঘিনী মন্দির এলাকার বাসিন্দারা খুব যে হতবাক এমনটা না। বিগত কয়েক বছরেও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। মন্দিরের আশপাশ থেকে ছাগলটা, মুরগিটা চুরি করে নিয়ে গেছে চোর। ঘন ঘন চুরির ঘটনায় নাজেহাল অবস্থা এলাকার বাসিন্দাদের। দিন পনেরো আগেই পান্ডু রায় নামে এক ব্যক্তির ছাগল চুরি হয়ে যায় পুরুলিয়া-রাঁচি ৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে। যতক্ষণে টের পেয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয় ততক্ষণে চোর পগার পার।
পুলিশের দাবি, ছাগল চুরির ঘটনা মাঝেমধ্যেই কানে আসছে ঠিকই। তবে এ ক্ষেত্রে কেউ খুব একটা অভিযোগ করেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy