রেণুকাদেবী। নিজস্ব চিত্র।
ছেলের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নামে গাড়িতে তুলে এক বৃদ্ধার সর্বস্ব লুঠ করল দুষ্কৃতীরা। ঘটনা সোমবার ইলামবাজার বাজার এলাকার। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত আরমান শেখের বাড়ি বর্ধমানের ভাতারের ওরগ্রামে। অন্য অভিযুক্তকে ধরার জন্যও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্যবসায়ী উমাপদ গড়াইয়ের স্ত্রী রেণুকা গড়াই ইলামবাজার হাটতলায় থাকেন। সোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ দুবরাজপুর রোডে তাঁর এক ছেলের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, বাজারে যাওয়ার পথে বৃদ্ধা রেণুকাদেবীর পথ আগলায় দুই অচেনা যুবক। দেবাসিশবাবুর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে, জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। কিন্তু পানাগড় রাস্তায় কিছু দূরে গাড়ি নিয়ে গিয়ে, বৃদ্ধার সোনার গয়না ছিনিয়ে নেয় ওই দুই দুষ্কৃতী।
এর পরেই মাঝ রাস্তায় বৃদ্ধাকে নামিয়ে গাড়ি নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। এ দিন রেণুকাদেবীর ছেলে দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘মায়ের খোঁজ দুপুরে না পেয়ে ভেবেছিলাম ভাই গৌতমের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু পড়শি এক জামাই ঘটনার কথা জানান। গাড়ি নিয়ে মাকে বাড়ি নিয়ে আসি। দুই দুষ্কৃতী মাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।’’ রেণুকাদেবী জানান, তাঁর চারটি হাতের চুড়ি, দুটি বালা, একটি সোনার হার-সহ প্রায় সমস্ত গয়না ছিনিয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওরা জোর করে আমাকে ছেলের বাড়িতে পৌঁছে দেবে বলে গাড়িতে তুলে নিল। তারপরেই গাড়িতে সোনার গয়না কেড়ে নিয়ে নামিয়ে দেয়। মাঝ রাস্তায় নামিয়ে দেওয়ায় কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না! কিছু টাকা ছিল, সে সবও ছিনিয়ে নেয় ওরা।’’
দেবাশিসবাবু জানান, রেণুকাদেবী কোনও মতে এক টোটো চালকের সঙ্গে পানাগড় বাজারে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। তখনই বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ জানান তিনি। জানা গিয়েছে, উমাপদ বাবুর মৃত্যুর পরে রেণুকাদেবী হাটতলার বাড়িতে থাকতেন। দুই ছেলে আলাদা ব্যবসা করেন ইলামবাজারে। রেণুকাদেবী নাতনীর মেয়েকে দেখতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। ঘটনায় কার্যত আতঙ্কিত বৃদ্ধা।
এ দিকে দেবাশিসবাবুর কাছে অভিযোগ পেয়ে, তদন্তে নামে ইলামবাজার পুলিশ।
এলাকার সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি টোল গেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেও তল্লাশি অভিযানে নামে তারা। গাড়ির নম্বর এবং হদিস পেয়ে, রাতেই অভিযান চালায় আশেপাশের এলাকায়। বর্ধমানের ভাতার থানার ওরগ্রামের বাসিন্দা আরমান শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই ঘটনার মারুতি গাড়ির মালিক তথা চালক। বৃদ্ধাকে জোর করে ওই গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে সোনার গয়না ছিনতাই হয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
ঘটনার সময়ে ওই গাড়িতে আর এক অভিযুক্ত তথা আরমান শেখের সঙ্গীরও খোঁজ করছে পুলিশ।
গড়াই পরিবারের পাশাপাশি ইলামবাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, কাউকে গাড়িতে জোর করে তুলে নেওয়ার ঘটনা এই প্রথম। তবে পুলিশের তৎপরতায় অভিযুক্ত ধরা পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy