Advertisement
০২ মে ২০২৪

বন্ধ সিম চালু করে নিহতের প্রেমিক ধৃত

এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার দাবি করেন, ‘‘অভিজিৎ রাধিকাকে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে। তাকে চুঁচুড়া থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। খুনের দায় স্বীকার করতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোরো শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০০:৫৮
Share: Save:

প্রেমিকা খুন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই প্রেমিকের ফোনের সিম বন্ধ ছিল। এতদিন হন্যে হয়েও তাই পালিয়ে যাওয়া প্রেমিকের নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ। কিন্তু ফের সেই সিম চালু করেই পুলিশের কাছে ধরা পড়ে গেলেন পুরুলিয়ার এক আদিবাসী যুবতী খুনে অভিযুক্ত বীরভূমের যুবক।

ধৃত অভিজিৎ মালের বাড়ি বীরভূম জেলার নলহাটিতে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে সে হুগলির চুঁচুড়ায় শ্বশুরবাড়িতে ছিল। ফোনের সূত্র ধরে শুক্রবার সেখান থেকে তাকে আটক করে পুরুলিয়ার বোরোয় নিয়ে আসে পুলিশ। জেরা করার পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার দাবি করেন, ‘‘অভিজিৎ রাধিকাকে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে। তাকে চুঁচুড়া থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। খুনের দায় স্বীকার করতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।’’ শনিবার তাকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে ছ’দিন পুলিশ হেফাজত হয়।

২৭ মার্চ বোরো থানার খড়িদুয়ারা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় শ্রমিক বছর পঁচিশের রাধিকা নিজের বাড়িতে ভরদুপুরেই খুন হন। তাঁর মাথায় কয়েকটি গভীর আঘাত ছিল। রাধিকার মা অচলা মুদির অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুনের মামলা শুরু হয়। তবে তিনি কারও নাম অভিযোগ করেননি।

পুলিশ জানিয়েছিল, নিহতের মায়ের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল, তাঁর সঙ্গে এক রাজমিস্ত্রির ঘনিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু তিনি ওই রাজমিস্ত্রির নাম-ধাম জানাতে পারেননি। নিহতের মোবাইলে একটি নম্বর দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। কিন্তু ওই ফোন বন্ধ ছিল। খোঁজ করে দেখা যায়, ভুয়ো তথ্য দিয়ে ওই সিম নেওয়া হয়েছিল। ফলে নাগাল পাওয়া যায়নি ওই সিমের মালিককে।

কিন্তু পুলিশ হাল ছাড়েনি। ওই সিম ফের চালু করা হয় কি না, সে দিকে নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছিল। তাতেই সাফল্য এল শেষ পর্যন্ত। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সম্প্রতি ওই সিম চালু করা হয়। দেখা যায়, নম্বরটি চুঁচুড়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে অভিজিতের খোঁজ মেলে। বোরোয় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সে খুনের কথা স্বীকার করে।’’

পুলিশের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাধিকা রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। অভিজিতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় ওড়িশায় কাজ করতে গিয়ে। অভিজিৎ রাধিকাকে একটি মোবাইল উপহার দেয়। সে কয়েকবার গ্রামের এক প্রান্তে থাকা রাধিকাদের বাড়িতে রাত কাটিয়ে গিয়েছে। পুলিশের দাবি, ইদানীং রাধিকা অভিজিৎকে বিয়ের জন্যে চাপ দিচ্ছিলেন। বিবাহিত এবং দুই ছেলের বাবা অভিজিৎ বিয়েতে রাজি ছিল না। এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল সে। ২৭ মার্চ রাধিকা ফোনে অভিজিৎকে ডেকে পাঠায়। সে দিন ব্যাগে সে ধারাল কোনও অস্ত্র নিয়ে আসে। সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। রাধিকা তাকে ঘরে ঢোকাতেই মুখ চেপে ধরে তাকে পরপর কোপ মেরে পালিয়ে যায় অভিজিৎ। তারপর থেকে এলাকা ছাড়া হয়ে যায় অভিজিৎ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sim card murder murder accused arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE