রাস্তায় গাড়িতে চলছে তল্লাশি। বান্দোয়ানে। নিজস্ব চিত্র।
মাওবাদীদের ডাকা শহিদ সপ্তাহ (২৮ জুলাই-৩ অগস্ট) ঘিরে পুরুলিয়া জেলার জঙ্গলমহল এলাকায় তৎপরতা বেড়েছে পুলিশ মহলে। সতর্কতা বাড়িয়ে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া জেলার জঙ্গলমহলের ছ’টি থানা এলাকায় ঝাড়খণ্ড থেকে ঢোকা সমস্ত গাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া, নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে দিনভর বিশেষত রাতে এলাকা ধরে ধরে নজর রাখা হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন-সহ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারাও বিভিন্ন থানা এলাকায় টহল দিচ্ছেন। পুলিশ সুপার বলেন, “মাওবাদীদের শহিদ সপ্তাহ ঘিরে আমরা বাড়তি সতর্ক রয়েছি। জঙ্গলমহল জুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।”
এর মধ্যে গত শুক্রবার মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় পাথরমহড়া গ্রামের কাছে রাস্তা নির্মাণের একটি সাইনবোর্ডে ‘মাওবাদী’ নামাঙ্কিত দু’টি পোস্টার উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পোস্টারে মানবাজার ১ ব্লকের বিডিও ও তাঁর গাড়ির চালককে ‘হুমকি’ দেওয়া হয়েছিল। একটি লজ নির্মাণকে ঘিরে ওই হুমকি দেওয়া হলেও পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, তা আদতে একটি ক্যান্টিন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কিছু লোক ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে পোস্টার সাঁটিয়েছে। তবে, গোটা বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে, জানায় পুলিশ।
রাজ্য গোয়েন্দাদের একটি সূত্রে জানা যায়, শহিদ সপ্তাহ চলাকালীন বরাবাজার ও বান্দোয়ান থানা লাগোয়া জঙ্গলে মাওবাদীদের গতিবিধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এলাকাগুলির অবস্থান ঝাড়খণ্ডে হলেও এলাকাগুলি জেলার সীমানা থেকে খুব দূরে নয়। সূত্রের খবর, মাওবাদী গতিবিধির কথা জানতে পেরে রবিবার ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার বোড়াম থানার বঁটা জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়েছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। গত শুক্রবারও ওই থানা এলাকারই অন্য একটি জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান হয়।
এ মুহূর্তে যদিও জেলায় মাওবাদীদের কোনও সংগঠন সক্রিয় নয় বলে গোয়েন্দাদের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় লিঙ্কম্যানেরা থাকলেও সংগঠনের সক্রিয়তার কোনও খবর নেই। রাজনৈতিক পালাবদলের পরে, রাজ্য সরকারের ঘোষিত পুনর্বাসন প্যাকেজে সাড়া দিয়ে অনেক মাওবাদী সদস্য মূলস্রোতে ফিরেছেন বলে শাসকদলের দাবি।
তবে ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে মাওবাদী গতিবিধির প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার প্রশ্নে ঢিলে দিতে রাজি নয় পুলিশ। জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এ সময়ে রাতে জঙ্গলমহলের রাস্তায় টহল দেওয়ার সময়ে প্রতি থানাকে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে টহল দেওয়ার রুটিন থাকলেও তা বদলানো এবং টহলের পথও পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, প্রতিটি থানা ও আউটপোস্টের সদর গেট রাতে বন্ধ রাখা ও উজ্জ্বল আলো জ্বেলে রাতভর নিরাপত্তারক্ষীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। কোনও এলাকায় বহিরাগত কেউ ঢুকলে যাতে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে দ্রুত খবর পৌঁছয়, তা-ও নিশ্চিত করা হয়েছে। জঙ্গলমহলে ‘ভিআইপি’দের যাতায়াতের দিকেও সজাগ দৃষ্টি রয়েছে পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy