Advertisement
১৬ মে ২০২৪

পাড়ুইয়ের কলেজে জট, আড়াই দিনে উঠল ঘেরাও

টানা আড়াই দিন ধরে ঘেরাও চলল পাড়ুইয়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়। শেষমেশ পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যস্থতায় শনিবার বিকেলে ঘেরাও মুক্ত হন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানের সহ-উপাচার্য সুকুমার কুণ্ডু বলেন, “প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোর মান বাড়ানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে ঘেরাও শুরু করেন কিছু পড়ুয়া।

আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র

আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়ুই শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৫
Share: Save:

টানা আড়াই দিন ধরে ঘেরাও চলল পাড়ুইয়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়। শেষমেশ পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যস্থতায় শনিবার বিকেলে ঘেরাও মুক্ত হন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানের সহ-উপাচার্য সুকুমার কুণ্ডু বলেন, “প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোর মান বাড়ানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে ঘেরাও শুরু করেন কিছু পড়ুয়া। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনার পরে এ দিন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা ঘেরাও প্রত্যাহার করে নেন।”

বোলপুর-সিউড়ি রাস্তায় পাড়ুইয়ের কেন্দ্রডাঙাল অবস্থিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিকাল, সিভিল, ইলেকট্রিক্যালে ডিপ্লোমা ও বিটেক এবং কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক পড়ানো হয়। প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় দু’শো। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর ঘাটতির অভিযোগ তুলে ওই ছাত্রছাত্রীদের একাংশই আন্দোলনে নামে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বরেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু একটি শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চলেছে। কিচ্ছু করা হয়নি। বারবার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’ পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, পাঠ্যক্রমে বাধ্যতামূলক হলেও কলেজে কোনও ওয়ার্কশপ করানো হয় না। গ্রন্থাগার, ল্যাবরেটরির প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও নেই। তাই শেষমেশ নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে একপ্রকার বাধ্য হয়েই পড়ুরা আন্দোলনে নামেন বলে দাবি।

এ দিকে, ওই ঘেরাওয়ের জেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আটকা পড়েন। তাতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখার অধ্যক্ষ কে চক্রবর্তী, ফিনান্স অফিসার অরুণাভ চট্টোপাধ্যায়, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রধান অভিধান গঙ্গোপাধ্যায়, উপ-কর্মসচিব শুভ্রজিৎ রিট এবং সদ্যকাজে যোগে দেওয়া সহ-উপাচার্য সুকুমার কুণ্ডু। এ দিনই ঘটনার খবর দেওয়া হয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। বিকেলে ৪টে নাগাদ পাড়ুই থানার পুলিশ এবং বোলপুর ব্লক প্রশাসনের পক্ষে প্রতিনিধিরা প্রতিষ্ঠানে যান। তাঁরা কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। মিনিট দশকের মধ্যে ঘেরাও তুলে নেন পড়ুয়ারা। ঘেরাও মুক্ত হয়ে ওই কর্মকর্তারা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের দাবি ন্যায্য। আন্দোলনও যুক্তিসঙ্গত। তবে, খাওয়াদাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা থাকলেও রাতে পরিবারের কাছে ফিরতে না দেওয়া অমানবিক।’’

ঘেরাওয়ে আটকে পড়া কলেজের কর্মকর্তারা।

পুলিশ-প্রশাসনকে আগে কেন খবর দেওয়া হয়নি? কর্মকর্তাদের দাবি, আলোচনা চলছিলই। আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় এ দিন পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। সুকুমারবাবু বলেন, “এক সপ্তাহও হয়নি কাজে যোগ দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পড়ুয়াদের সমস্যা দ্রুত মেটাব।”

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ‘‘বেসরকারি কলেজগুলোর অবস্থা খতিয়ে দেখতে এবং সেখানে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার দিকে নজর রাখতে রাজ্য সরকার সম্প্রতি একটি মনিটরিং কমিটি গড়েছে। ওখানে ঠিক কী ঘটেছে, তা বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tangle College Gherao
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE