প্রতীকী ছবি।
বেতনক্রম বৃদ্ধির দাবি দীর্ঘদিন ধরেই তুলে আসছিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত সে দাবি মিটলেও বাঁকুড়া জেলার প্রাথমিক ও হাইস্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটা বড় অংশের তথ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের ‘পোর্টাল’-এ সময়মতো না ওঠায় তাঁরা এখনই নতুন বেতনক্রমের আওতায় আসতে পারছেন না। ফলে, জানুয়ারি মাসের বেতনে অনেকে বর্দ্ধিত টাকা পাবেন না বলে জানাচ্ছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে শিক্ষকমহলে। অনেকেরই অভিযোগ, সরকারের পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণেই তাঁরা এই পরিস্থিতির শিকার। তবে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের আশ্বাস, এখনই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা নতুন বেতনক্রমের আওতায় না এলেও দ্রুত তাঁদের সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে। বাঁকুড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) গৌতমচন্দ্র মাল ও জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) জগবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “আগামী মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত নতুন বেতনক্রমের আওতায় আসার দফায় দফায় সুযোগ দেওয়া হবে। সমস্যা মিটিয়ে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই নতুন বেতনক্রমের আওতায় আনা হবে। বর্ধিত বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে যাঁদের বকেয়া থাকবে, বিশেষ পদ্ধতিতে তাঁদের তা দেওয়া হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, এ বছর জানুয়ারি মাস থেকে শিক্ষকদের নতুন বেতনক্রম চালু করা হবে। সে জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরের ‘পোর্টাল’-এ অনলাইনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য জমা নেওয়া শুরু হয়। বাঁকুড়া জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ও হাইস্কুল—উভয় স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই অনলাইনে তথ্য জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত ১৩ জানুয়ারি থেকে। চলে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, হাইস্কুলের ক্ষেত্রে বেতনক্রম বৃদ্ধির যোগ্যতা সম্পন্ন প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষিকার তথ্য স্কুল থেকেই অনলাইনে জমা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু জেলার বেশির ভাগ প্রাথমিক স্কুলে কম্পিউটার না থাকায় সে সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য জমা করা হচ্ছিল সংশ্লিষ্ট অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে।
তবে ‘সার্ভার’-এর সমস্যার কারণে প্রথম থেকেই অনলাইনে তথ্য জমা দিতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হয় বলে অভিয়োগ। বহু স্কুলই ঠিকঠাক তথ্য জমা করতে পারেনি। আবার অনেকে তথ্য অনলাইনে জমা দিলেও কিছু ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। সময়সীমা পার হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, সারা জেলায় অন্তত ৫০টি হাইস্কুল ও ২১০টি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিভিন্ন সমস্যা রয়ে যাওয়ায়, তাঁরা এখনই নতুন বেতনক্রম হাতে পাচ্ছেন না।
এ নিয়ে সরব হয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। এবিটিএ-র জেলা সহ-সম্পাদক আশিস পান্ডে বলেন, “রাজ্যের শিক্ষা দফতরের পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণেই এমনটা হল। প্রথম থেকেই সার্ভারে সমস্যা ছিল। পরে যাঁদের তথ্যে ত্রুটি ধরা পড়েছে, তাঁদেরও সংশোধনের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হল না।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অবশ্য পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “অনলাইনে তথ্য জমা করার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল। কিছু স্কুল সময়মতো কাজটি করতে পারেনি বলেই এটা ঘটেছে।”
‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, “রাজ্য সরকার সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রতিই দায়বদ্ধ। জেলার বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নতুন বেতনক্রমের আওতায় এসে গিয়েছেন। যাঁদের কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে, সেগুলিও দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy