Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Mid day Meal

পড়ুয়াদের পাতে মাংস দিতে নির্দেশ, চিন্তা খরচ নিয়েই 

সীমিত বরাদ্দের মধ্যেই কী ভাবে বিশেষ পদ দেওয়া যায় সেটাই চিন্তায় রেখেছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। বিশেষ করে যে সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কম সমস্যা সেখানে আরও বেশি দাবি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১০
Share: Save:

পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে মিড-ডে মিলে ‘আকর্ষক’ মেনু করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পড়ুয়াদের মেনুতে মুরগির মাংস বা অন্য ভাল কোনও পদ রাখতে বলা হয়েছে। রবিবার পয়লা বৈশাখ যেহেতু স্কুল ছুটি সে জন্য পড়ুয়াদের পাতে বিশেষ মেনু থাকছে আজ, সোমবার। কিন্তু মিড-ডে মিলের সীমিত বরাদ্দে কী ভাবে সেই ‘ভাল মেনু’র খরচ জোগানো যাবে সেটাই চিন্তা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমিত বাজেটের মধ্যেই পড়ুয়াদের সোমবার যাতে একটু অন্য রকম খাওয়ানো যায় মৌখিক ভাবে তা বলা হয়েছে। শুক্রবার এ ব্যাপারে জেলা স্তরে একটি ভিডিয়ো কনফারেন্স হয়েছে । ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন), ওসি মিড-ডে মিল, ডি-আই(প্রাথমিক ও মাধ্যমিক), এসআই এবং প্রতিটি ব্লকের বিডিওরা। পরে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমে সেটা প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষকদের কাছে পৌঁছেছে।

কিন্তু সীমিত বরাদ্দের মধ্যেই কী ভাবে বিশেষ পদ দেওয়া যায় সেটাই চিন্তায় রেখেছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। বিশেষ করে যে সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কম সমস্যা সেখানে আরও বেশি দাবি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাঁরা মনে করাচ্ছেন, কেন্দ্র রাজ্য মিলিত ভাবেই মিড-ডে মিলের টাকা দেয়। এই মুহূর্তে মিড-ডে মিলে প্রাথমিকে পড়ুয়া-পিছু বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। উচ্চ-প্রাথমিকে মোট বরাদ্দ ৮ টাকা ১৭ পয়সা। বর্তমান বাজারে এই সামান্য টাকায় কোনও শিশুকে পুষ্টির জোগান দেওয়া আদৌ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তার উপরে মুরগির মাংস বা অন্য ভাল পদ করতে হলে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পকেটে থেকে টাকা দিতে হবে বলেও দাবি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকের।

জেলার বেশ কয়েকটি প্রাথমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বক্তব্য, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চাল বাদে যে পরিমাণ বরাদ্দ তাতে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের একটি ডিম (বর্তমান বাজার মূল্য সাড়ে ৫ টাকা) সেদ্ধও দেওয়া যায় না। উচ্চ-প্রাথমিকে যদিও সম্ভব তবে কত জন পড়ুয়া মিড-ডে মিল খাবে সেই অনুযায়ী টাকা বরাদ্দ হয়। সেখানেও বরাদ্দ সীমিত থাকে ৮৫ শতাংশে। তবে এর মধ্যেও মেনু ঠিক করে ফেলেছেন শিক্ষকদের অনেকেই। কেউ বলছেন, ‘‘আলু পোস্ত, মুরগির মাংসের ঝোল থাকবে।’’ কেউ আবার বলছেন, ‘‘চেষ্টা করছি মিক্সড ভেজ, ডিমের কারি ও সঙ্গে আইসক্রিম দিতে।’’

নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাস বলছেন, ‘‘মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হোক। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে এই দাবি জানিয়ে আসছি। তা ছাড়া যে ভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তাতে পড়ুয়াদের মাথা পিছু যা বরাদ্দ তাতে মিড-ডে মিল চালানোই অসম্ভব। একদিন স্পেশাল মেনুর কোনও যুক্তি নেই। বাকি দিনগুলো কী হবে?’’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক বলছেন, ‘‘বছরের প্রথম দিন ওদের স্পেশাল মেনু দিলে খুদে পড়ুয়াদের ভাল লাগবে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা একটু আন্তরিক হলেই সেটা সম্ভব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE