Advertisement
১৮ মে ২০২৪
State employees General strike

শাসকদলের শিক্ষকেরাও কি শরিক!

প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব স্কুলের সমস্ত শিক্ষকই কি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বা যৌথ মঞ্চের সদস্য? স্কুলগুলিতে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য থাকলে স্কুলগুলি পুরোপুরি বন্ধ হবে কেন?

বোরোর ঘুসিকজোড় প্রাইমারি স্কুল থাকল বন্ধ। নিজস্ব চিত্র

বোরোর ঘুসিকজোড় প্রাইমারি স্কুল থাকল বন্ধ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৩
Share: Save:

বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবিতে ধর্মঘটে কি শামিল হলেন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যদের একাংশও? দুই জেলার বহু স্কুল শুক্রবার পুরোপুরি বন্ধ থাকায় এই প্রশ্ন উঠে গেল। যা পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তৃণমূলের পক্ষে স্বস্তির নয় বলে দাবি করছেন বিরোধীরা। যদিও সে দাবি মানতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব।

এ দিন রঘুনাথপুর হাই স্কুল, এমএম হাইস্কুল, শাঁকড়া হাই স্কুল, পুরুলিয়ার শান্তময়ী গার্লস’ হাই স্কুল, ঝালদা হাই স্কুল, ঝালদা গার্লস’ হাই স্কুল, বোরো হাই স্কুল, বান্দোয়ানের ঋষি নিবারণচন্দ্র বিদ্যাপীঠ থেকে ইঁদপুরের সরোজিনি বালিকা বিদ্যালয়, বিষ্ণুপুরের চৌকান গ্রামের সাঁওতাল প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসিকগঞ্জ প্রাইমারি বিদ্যালয়ে গিয়ে পুরোপুরি বন্ধ দেখা গিয়েছে। দু’জেলার বহু স্কুলের একই অবস্থা ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর মিলেছে। ওই সব স্কুলের শিক্ষকদের একটা বড় অংশ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে যান। কিছু স্কুলে প্রধান শিক্ষক উপস্থিত থেকে মিড ডে মিল খাওয়ানোর পরে ছুটি দিয়েছেন।

প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব স্কুলের সমস্ত শিক্ষকই কি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বা যৌথ মঞ্চের সদস্য? স্কুলগুলিতে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য থাকলে স্কুলগুলি পুরোপুরি বন্ধ হবে কেন? ঘটনা হল, ধর্মঘটের প্রচারে স্লোগান উঠেছিল— ‘লাল, সবুজ, গেরুয়া, সবার ডিএ বকেয়া’। ধর্মঘটের দিন প্রকাশ্যে না এলেও পরোক্ষ ভাবে স্কুলে, অফিসে অনুপস্থিত থেকে শাসক দলের কর্মচারী ও শিক্ষকেরা তাঁদের সমর্থন জুগিয়েছেন বলে দাবি করছেন সংগ্রামী যৌথমঞ্চের বাঁকুড়া জেলা আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ ঘোষ। তাঁর দাবি, ‘‘বহু স্কুলে তৃণমূল শিক্ষা সেলের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের বড় অংশই গরহাজির ছিলেন। জেলাশাসকের অফিসেও বহু তৃণমূলপন্থী কর্মী এ দিন কাজে আসেননি।”

সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র পুরুলিয়ার সম্পাদক ব্যোমকেশ দাস থেকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পুরুলিয়ার যুগ্ম আহ্বায়ক কৃপাসিন্ধু গরাঁই-এর দাবি, ‘‘তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন বলেই জেলায় বহু সংখ্যক স্কুল পুরোপুরি বন্ধ ছিল।” সে দাবি উড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বাঁকুড়া জেলা সভাপতি গৌতম দাস ও পুরুলিয়ার সভাপতি সত্যকিঙ্কর মাহাতোর দাবি, ‘‘জেলায় সামান্য কিছু স্কুল বন্ধ থাকলেও বেশির ভাগ স্কুলই খোলা ছিল। আমাদের সংগঠনের সমস্ত সদস্য স্কুলে যোগ দিয়েছেন।”

এ দিন পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা ভবনের সদর দরজা আটকে অবস্থান চলে। দুপুর ১২টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে দরজা খোলার পরে কর্মীরা ভিতরে ঢোকেন। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) গৌতমচন্দ্র মাল বলেন, ‘‘পরে প্রায় সমস্ত কর্মীই অফিসে ঢুকেছেন।’’ মহকুমা শাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত ও মহকুমা শাসক (খাতড়া) নেহা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কর্মী উপস্থিতির হার স্বাভাবিক ছিল। যদিও সংগ্রামী যৌথমঞ্চের বাঁকুড়ার জেলা আহ্বায়ক বিশ্বজিতের অভিযোগ, “ধর্মঘট শেষ হওয়ার পরে প্রশাসনের আধিকারিকেরা ফোন করে বহু কর্মীকে চাপ দিয়ে হাজিরা খাতায় সই করিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

State employees General strike Government Allowance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE