সুস্থ থাকার বার্তা দিেয় স্যানিটারি ন্যাপকিন তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
অতিমারিতে খাবার পৌঁছে দিতেই তাঁরা পথে নেমেছিলেন। তখনই জানতে পারেন, অনেক মহিলা এখনও সচেতনতার অভাবে কিংবা দারিদ্রের কারণে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না। তাই গত জানুয়ারি মাস থেকে বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের বিভিন্ন গ্রামে কিশোরী ও মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করে, তার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরছেন এক দল ছাত্রী। বিডিও (পাত্রসায়র) নিবিড় মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীদের সঙ্গে কিছু ছাত্র অতিমারি-পর্বে সামাজিক নানা কাজ করছেন। শুভেচ্ছা রইল।’’
পাত্রসায়রের বাসিন্দা তথা কলকাতার সাগর দত্ত মেডিক্যালের হাসপাতালের নার্সিংয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সোমাশ্রী নন্দী, পাত্রসায়র কলেজের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের নিবেদিতা ঘোষ এবং দ্বিতীয় বর্ষের মৌমি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ত্রাণ দিতে গ্রামে গিয়ে মহিলাদের থেকে আমরা তাঁদের ঋতুকালীন নানা সমস্যার কথা জানতে পারি। স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার না করে তাঁরা নোংরা কাপড় বার বার ব্যবহার করেন শুনে অবাক হয়ে গিয়েছি। সে জন্য সংক্রমণ যেমন হয়, তেমনই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের সময় অনেক রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় মেয়েদের।। বার বার গ্রামে গিয়ে এ কথা বোঝানোর পরে তাঁদের মধ্যে ন্যাপকিন ব্যবহারে অনেকখানি উৎসাহিত করা গিয়েছে।’’
পাত্রসায়রের চন্দনকেয়ারী, রাখাশোল, কাকাটিয়া, পলাশবুনি, ডুমনি, শিবকুণ্ডা প্রভৃতি গ্রামগুলির অধিকাংশই আদিবাসী-প্রধান। মূলত দিনমজুরদের বাস। নেতাজি সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির প্রাণীবিদ্যার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বালসীর দিয়া মিশ্র জানান, কারও কারও মধ্যে সচেতনতা তৈরি হলেও অতিমারিতে যেখানে খাবার জোগাড় করতে নাজেহাল অবস্থা, সেখানে স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার ভাবনা বিলাসিতার সমান। তাই ওই ছাত্রীরা প্রথমে নিজেদের খরচ বাঁচিয়ে ন্যাপকিন কিনে তুলে দেন মহিলাদের হাতে। এখন শিক্ষক, বন্ধুদের অনেকেই তাঁদের সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছেন।
কাকাটিয়ার এক কিশোরী বলে, ‘‘দিদিদের কাছে জেনেছি, ঋতু স্বাভাবিক ব্যাপার। এতে লজ্জার কিছু নেই। দিদিদের দেওয়া স্যানিটারি ন্যাপকিনই ব্যবহার করি।’’
কিন্তু যে কাজ স্বাস্থ্য দফতরের করার কথা, তা কয়েকজন ছাত্রীকে কেন করতে হচ্ছে? বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার, ‘‘আমাদের আশাকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মহিলাদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় প্রচার করছেন। তবে ছাত্রীরা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে এলে, তা অবশ্যই সমাজের পক্ষে ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy