Advertisement
০৬ মে ২০২৪

পুলিশকে বিভ্রান্ত করেই চলেছে সনাতন

শিশুটির মা তথা তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্কের কথা যে পুলিশ জানে, সেই ব্যাপারটা সনাতনও বুঝে গিয়েই নতুন তত্ত্ব ফাঁদছে বলে মনে করছে পুলিশ।

অভিযুক্ত: আদালতে তোলার আগে সনাতন।

অভিযুক্ত: আদালতে তোলার আগে সনাতন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০১:৫৬
Share: Save:

জেরায় ভেঙে পড়া তো দূরের কথা, ক্রমাগত পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে পুরুলিয়ার সুচ-কাণ্ডে ধৃত সনাতন গোস্বামী (ঠাকুর)। এ বার পুলিশের কাছে সে দাবি করেছে, শিশুটির শরীরে সুচ ঢোকানোর জন্য দায়ি ওই শিশুর মায়ের প্রাক্তন প্রেমিক।

পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে, বিয়ের আগে গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল ওই শিশুর মায়ের। পরে অন্য এক জনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছর পরে ওই শিশুকন্যার জন্ম হয়েছিল। পাঁচ বছর পরে বিয়ে ভেঙে যায়। কিছু দিন পরেই সনাতন ওই যুবতীকে বিয়ে করে। জেরায় সনাতন দাবি করেছে, প্রথম বিয়ের পরেও শিশুটির মায়ের সঙ্গে পুরনো প্রেমিকের সম্পর্ক বজায় ছিল। সে-ই সুচ ফুটিয়েছে শিশুটিকে। জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘হোমগার্ডে চাকরি করার সুবাদে সনাতন জানে, পুলিশ কী ভাবে জেরা করে। তাই সে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’’ শিশুটির মা তথা তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্কের কথা যে পুলিশ জানে, সেই ব্যাপারটা সনাতনও বুঝে গিয়েই নতুন তত্ত্ব ফাঁদছে বলে মনে করছে পুলিশ।

বুধবার হেফাজতে নেওয়ার পরে সনাতনকে জেরা করা শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার নিজের অফিসে সনাতনকে জেরা করেছেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস। সূত্রের খবর, ক্রমাগত বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে তদন্তকে বিপথে চালানোর চেষ্টা করে গিয়েছে সনাতন। পুলিশ সুপারের কাছেও জেরাতে সনাতন দাবি করেছে, শিশুটির শরীরে সুচ বিদ্ধ করেছিল তার মায়ের প্রেমিক। অথচ, মঙ্গলবার রাতে আসানসোল স্টেশনে নেমে সাংবাদিকদের কাছে সনাতন দাবি করেছিল, সে নির্দোষ। তার বৌমারা হিংসা করে শিশুটির শরীরে সুচ ফুটিয়েছে। তার পরেই হঠাৎ বয়ান বদলে শিশুর মায়ের প্রেমিককে হাজির করেছে সে।

তবে তদন্তে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য, গ্রামবাসী ও শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ প্রায় নিশ্চিত যে সনাতনই সুচগুলি ফুটিয়েছিল। এই অবস্থায় পুলিশ জোর দিচ্ছে খুনের পদ্ধতি ও খুনের কারণের উপরে। কিন্তু অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপাতে যে ভাবে পাকা অপরাধীর মতো উল্টোপাল্টা কথা বলে চলেছে সনাতন, তাতে কিছুটা হলেও অবাক পুলিশ কর্তারা।

পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস এ দিন বলেন, ‘‘জেরায় নানা বিভ্রান্তিকর কথা বলছে সনাতন। আরও জেরা করে প্রকৃত সত্য জানার চেষ্টা চলছে।” তবে মৃত শিশুটির মাকে যে সনাতন বিয়ে করেছিল সেই বিষয়টি জেরায় সে স্বীকার করেছে সে বলে জানান এসপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE