Advertisement
০২ জুন ২০২৪

রামের নামে পথে তৃণমূল নেতারা

দু’দিনে পুরুলিয়া জেলায় ১৯৩টি শোভাযাত্রা হওয়ার কথা ছিল। শনিবার পুরুলিয়া শহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বজরঙ্গ দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং কোথাও কোথাও বিভিন্ন আখড়ার মিছিল বেরিয়েছিল।

পুরুলিয়া সদর থানার সামনে ডিজে।  নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়া সদর থানার সামনে ডিজে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

রামনবমীর শোভাযাত্রায় পুরুলিয়ায় বিজেপির প্রার্থী, নেতাদের দেখা গিয়েছিল শনিবার। রবিবারের শোভাযাত্রায় শামিল হলেন তৃণমূলের বিধায়ক ও নেতারাও।

দু’দিনে পুরুলিয়া জেলায় ১৯৩টি শোভাযাত্রা হওয়ার কথা ছিল। শনিবার পুরুলিয়া শহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বজরঙ্গ দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং কোথাও কোথাও বিভিন্ন আখড়ার মিছিল বেরিয়েছিল। তাতে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের ভিড় চোখে পড়েছিল। ব্যতিক্রম হিসাবে সে দিন রঘুনাথপুর পুরসভার তৃণমূলের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়কে একটি শোভাযাত্রায় হাঁটতে দেখা গিয়েছিল। রবিবার কাশীপুরে শোভাযাত্রায় হাঁটলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া, জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য সৌমেন বেলথরিয়া। পুরুলিয়া শহরে শোভাযাত্রায় হেঁটেছেন দলের জেলা তৃণমূলের অন্যতম সম্পাদক গৌতম রায়। ওই মিছিলে যোগ দেওয়া লোকজনকে সরবত খাওয়াতে দেখা গিয়েছে শহর তৃণমূলের সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডলকে।

রামনবমীর মিছিলে তৃণমূলের বিধায়ক ও নেতাদের দেখে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, ‘‘ভোটের মুখে ঠেলায় পড়ে তৃণমূলকেও এখন রামনাম জপতে হচ্ছে।” তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলে পাল্টা দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর ব্যাখ্যা, ‘‘রামনবমীর শোভাযাত্রায় বিজেপি রাজনৈতিক রং মাখাতে চেয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে রাজনীতিকে টেনে আনা পছন্দ করেন না বলেই বহু জায়গায় নিজেরাই আলাদা করে শোভাযাত্রা করেছেন। আমাদের দলেরও কেউ কেউ শোভাযাত্রায় ছিলেন।’’

শনিবার পুরুলিয়া জেলার যে সব এলাকায় শোভাযাত্রা হয়েছে, তাঁর বেশির ভাগ হয়েছে মূলত বজরঙ্গ দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে। আবার রবিবার জেলার কয়েকটি জায়গায় শোভাযাত্রার মাথায় ছিলেন তৃণমূলের পরিচিত মুখেরা। দু’দিনই অবশ্য বিভিন্ন আখড়া থেকেও শোভাযাত্রা বার হয়।

এ দিন আদ্রায় মোটরবাইক নিয়ে শোভাযাত্রায় হাজার খানেক যুবক ছিলেন। সেখানে দেখা যায় তৃণমূলের শহর কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। তাঁর দাবি, ‘‘রাজনীতি নয়। মানুষের টানেই শোভাযাত্রায় এসেছি।’’ সকালেই কাশীপুর ব্লক সদরে রামের মূর্তি নিয়ে বড় শোভাযাত্রা হয়। সামনের সারিতে ছিলেন বিধায়ক স্বপনবাবু। বিধায়ক দাবি করেন, ‘‘রামের নামে রাজনীতি করছে বিজেপি। আমরা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মের নামে রাজনীতির প্রতিবাদ জানিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই রামনবমী পালন করছি।”

এ দিন জেলার অন্যত্র শোভাযাত্রা ও লাঠিখেলা হয়েছে। ঝালদা শহরে এ দিন বিকেলে আনন্দবাজার, বাঁধাঘাট, পঞ্চমুখী মোড়-সহ ১০টি জায়গায় শোভাযাত্রা ও লাঠিখেলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বাঘমুণ্ডিতে ২২টি দল শোভাযাত্রা বার করেছিল। কোটশিলায় শোভাযাত্রা করেছে ২০টি দল। অন্যদিকে বরাবাজারে বজরঙ্গ দলের উদ্যোগে শোভাযাত্রা হয়।

শনিবারের মতোই এ দিনও পুরুলিয়া শহরের শোভাযাত্রায় সাউন্ডবক্সের দাপাদাপি দেখা গিয়েছে। এ দিন সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘শনিবার যে সব শোভাযাত্রায় বিধি ভেঙে সাউন্ডবক্স বাজানো হয়েছিল, সে সব আটক করে নির্দিষ্ট ধারায় মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছি। রবিবারের শোভাযাত্রাতেও বিধি ভাঙায় একই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

এ দিন বিকেলে বাঁকুড়া শহরে রামনবমীর বর্ণাঢ্য মিছিল হয়। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে শিল্পীরা গান গান। পাঁচবাগা থেকে মিছিল বার হয়। শেষ হয় হিন্দু স্কুলে। বাঁকুড়া শহরের ভিতরে যাতে যানজট না তৈরি হয়, সে জন্য পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণ করে। মিছিলে যুব সম্প্রদায়ই ছিল বেশি। এ বছর মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

শোভাযাত্রার মধ্যে ছিল ভিন্‌ রাজ্যের ময়ূর নৃত্য। রামচন্দ্রের কিছু বড় বড় কাটআউট নিয়ে ট্যাবলো বার হয়। খাতড়া শহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও শোভাযাত্রা বার হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ram Navami TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE