Advertisement
২৭ মে ২০২৪

নেতা জুয়া খেলানোয় অভিযুক্ত

কয়লাখনি অঞ্চল নিতুড়িয়াতে জুয়োর আসর বসার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে পুজোর মরসুমে বড়সড় মাপের জুয়োর আসর নিতুড়িয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় বসে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ওই সব আসরে এক রাতে লাখ লাখ টাকা ওড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩৬
Share: Save:

জুয়া চালানোর অভিযোগে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির নামে অভিযোগ দায়ের করল পুলিশ।

নিতুড়িয়া থানার পারবেলিয়া এলাকায় শুক্রবার রাতে ইসিএলের কমিউনিটি হলে জুয়োর আসর বসেছিল। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই লজে অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করে। ওই আসর থেকে উদ্ধার করা হয় দু’লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে ওই জুয়ার আসর বসিয়েছিলেন ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি হরেরাম সিংহ। এরপরেই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এরপরেই অভিযুক্ত ওই যুব নেতা পলাতক। তাই তাঁকে পুলিশ ধরতে পারেনি। যদিও শনিবারই তিনি ফোনে আনন্দবাজারের কাছে দাবি করেছেন, তিনি জুয়ার খেলার সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নন।

কয়লাখনি অঞ্চল নিতুড়িয়াতে জুয়োর আসর বসার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে পুজোর মরসুমে বড়সড় মাপের জুয়োর আসর নিতুড়িয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় বসে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ওই সব আসরে এক রাতে লাখ লাখ টাকা ওড়ে।

শুক্রবার রাতে সেই রকমেরই একটি জুয়োর আসর বসেছিল পারবেলিয়াতে ইসিএলের ওই কমিউনিটি হলে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই অনুষ্ঠান বাড়িতে বড়সড় জুয়োর আসর চলছে খবর পেয়ে রাত ১২টা নাগাদ নিতুড়িয়া থানার পুলিশ লজে অভিযান চালায়। সেখান থেকেই ধরা পড়ে সাত জন।

ধৃতেরা নিতুড়িয়া ও সাঁতুড়ি থানা এলাকার বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়া প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ‘বোর্ড মানি’ বলে দাবি পুলিশের। অর্থাৎ ধৃতেরা আয়োজকদের কাছে আগাম ওই টাকা জমা দিয়ে জুয়ো খেলছিল।

এ দিন ধৃত সাত জনকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হয়। সবার জেল হাজত হয়েছে।

অন্যদিকে, শাসকদলের যুব নেতার বিরুদ্ধে জুয়ো খেলানোর অভিযোগ ওঠায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নিতুড়িয়া এলাকায়। হরেরামবাবু শুধু যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতিই নন, তৃণমূল প্রভাবিত কয়লাখনির শ্রমিক সংগঠনের বড় মাপের নেতাও বটে।

পুলিশের দাবি, ধৃতেরাই জুয়োর আসরের আয়োজক হিসেবে হরেরামবাবুর নাম দাবি করায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পারবেলিয়ার ওই ম্যারেজ হল তথা কমিউনিটি হলটি আবার দেখভাল করেন হরেরামবাবু নিজেই।

তবে শুধু শুক্রবারই যে সেখানে জুয়োর আসর বসেছিল তা নয়, পুলিশ দাবি কিছু দিন ধরেই সেখানে জুয়োর আসর চলছিল বলে তাদের কাছে খবর আসছিল। শুক্রবার সুনির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ম্যারেজ হলে অভিযানে যায়।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হরেরামবাবু। তিনি বলেন, ‘‘গত ১৯ বছর ধরে রাজনীতি করছি। কোনও রকম দুর্নীতির সঙ্গে আমার যোগ আছে বলে কেউ কখনো অভিযোগ তোলেনি। তারপরেও পুলিশ কেন আমার বিরুদ্ধে জুয়া খেলানোর অভিযোগ তুলেছে বুঝতে পারছি না।’’

হরেরামবাবুর দাবি, তাঁর নাম জুয়া-কাণ্ডে জড়িয়ে যাওয়া খবর পেয়ে তিনি নিজেই পুলিশকে ফোন করে জানিয়েছেন, ওই লজের লিজ তাঁর দাদার নামে রয়েছে। সেখানে জুয়ার আসর বসেছিল বলে তিনি কিছুই জানতেন না।

তাঁর আশঙ্কা, ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তবে কারা ষড়যন্ত্র করেছে, সেই বিষয়ে স্পষ্টও কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই যুব নেতা।

জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুশান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘হরেরামবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে বিশদে কিছু জানি না। দলীয় স্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gambling TMC Accused Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE