Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Jhalda

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরে বিদ্যুৎ পেল দুই পাড়া

দু’টি পাড়ায় কম-বেশি ৪০টি পরিবারের বাস। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার বাসিন্দাদের বেশির ভাগ দিনমজুর।

Jhalda village receive electricity after 75 years

ঝালদার বড়গ্রামের কাছে নায়কপাড়াতে | দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় |

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
ঝালদা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ০৯:২৯
Share: Save:

পরাধীনতার অন্ধকার কেটে স্বাধীনতার আলো জ্বলেছে ৭৫ বছর আগে। কিন্তু বিদ্যুতের আলো জ্বলল এই প্রথম। আর একটা স্বাধীনতা দিবস পালনের আগে খুশির আলোয় ঝলমলে হয়ে উঠেছে ঝালদা শহর লাগোয়া বড়গ্রামের নায়কপাড়া ও তাঁতিপাড়া।

দু’টি পাড়ায় কম-বেশি ৪০টি পরিবারের বাস। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার বাসিন্দাদের বেশির ভাগ দিনমজুর। পঞ্চায়েত ভোট আসতেই দেওয়ালে পানীয় জল এবং রাস্তার দাবির কথা লিখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তাঁরা। তার পরেই সক্রিয় হয় প্রশাসন। তড়িঘড়ি বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয় পাড়ায়। ভোটের পরেই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

ওই এলাকায় বাসিন্দা ধনঞ্জয় নায়ক, কিরীটী নায়কদের কথায়, ‘‘গ্রামের কিছু দূরেই ঝালদা শহর। সন্ধ্যার পরে সেখানে আলো জ্বলত। অন্য দিকে আমাদের পাড়ায় ঘিরে থাকত নিকষ অন্ধকার। বহুবার বিদ্যুতের জন্য আবেদন নিবেদন করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। ভোট এলেই পাড়ায় এসে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যেতেন বিভিন্ন দলের নেতারা। ভোটের পরে আর তাঁদের খোঁজ মিলত না। এ বার পঞ্চায়েত ভোট আসতেই সকলে এককাট্টা হয়ে সিদ্ধান্ত নিই, আগে আলো দিতে হবে, তার পরে ভোট দেব। দেওয়ালে লেখা হয় সেই দাবির কথা। তাতে কাজ হয়েছে। এত দিন পরে আঁধার ঘুচল পাড়ার।’’

অনেকের দাবি, অন্য গ্রামে গিয়ে মোবাইল চার্জ করার জন্য দিতে হত ১০ টাকা। আগে দুই পাড়ায় পড়াশোনার তেমন রেওয়াজ ছিল না। এখন দিন বদলেছে। বেড়েছে পড়ুয়ার সংখ্যা। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সনিয়া তন্তুবায়ের কথায়, ‘‘কেরোসিনের দাম বেশি বলে পোড়া মোবিলের ডিব্রি আলো জেলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে এত দিন। চোখ জ্বালা করলেও উপায় ছিল না।’’

আর এক বাসিন্দা মমতা নায়কের কথায়, ‘‘আত্মীয়-স্বজনদের ঘরে ডাকতেও লজ্জা করত। পাড়ায় বিদ্যুৎ নেই শুনে ঘরে আসা লোকজন তাজ্জব হয়ে যেতেন। চুপ করে সব শোনা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না আমাদের। মনে ক্ষোভ জমেছিল।’’

রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দাবি, খুঁটি পোঁতার জন্য জমির সমস্যা ছিল। সে সব মিটে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে দুই পাড়ায়। বিডিও (ঝালদা ১) রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’টি পাড়ার বাসিন্দাদের মূল দাবি পূরণ হয়েছে। আর কোনও সমস্যা থাকলে প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhalda Rural Electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE