ফের বালিঘাট ঘিরে অশান্ত বীরভূম।
ময়ূরাক্ষী নদীর বালিঘাট নিয়ে ওই গোলমালে দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি চলল। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি করল লোকজন। একাধিক মোটরবাইক ও চালাঘরে আগুন লাগানো হল। শুক্রবার দপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ি থানার দুর্গাপুর মোড় সংলগ্ন পাঁচপাকুড়িয়া গ্রামের কাছে। এ দিনের ঝামেলা অবশ্য লিজপ্রাপ্ত বালিঘাটের ঠিকাদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নয়। বরং সরকারি ভাবে লিজপ্রাপ্ত দুই ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে।
এ দিন বেলা সাড়ে বারোটা থেকে একটার মধ্যে ময়ূরাক্ষী নদীর ডোবরডা মৌজার দু’টি আলাদা দাগ নম্বরে লিজপ্রাপ্ত ঠিকাদারের দলবলের মধ্যে বিবাদের ফলেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কোনও পক্ষই পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেনি। কিন্তু, এই ঘটনাতেও জড়িয়ে গিয়েছে শাসকদলের এক স্থানীয় নেতার নাম।
কেন এই বিবাদ?
প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রের খবর, মদনমোহন মণ্ডল নামে এক ঠিকাদার ময়ূরাক্ষীর এক পাড়ে থাকা ওই মৌজায় লিজ নিয়ে বালি তুলছিলেন। ওই অংশটি মহম্মদবাজার থানা এলাকার মধ্যে পড়লেও বালি পরিবহণ হচ্ছিল সিউড়ি থানা এলাকা হয়ে। দিন কয়েক আগে নদীর অন্য প্রান্তে (যা সিউড়ি থানার আওতায়) একই মৌজার অন্য দাগ নম্বরে বালি তোলার বরাত পায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি সংস্থা। এ দিন বালি বহনের রাস্তা ভাগাভাগি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। পরে সেটাই চূড়ান্ত আকার নেয়।
মদনমোহনবাবুর দাবি, ‘‘বালি তোলার পরে যে রাস্তা দিয়ে তা নিয়ে যাচ্ছিলাম, সেটার সব অংশ সরকারি রাস্তা নয়। বালি বহনের জন্য কয়েক জনের সঙ্গে চুক্তি করে আমি নিজে অস্থায়ী রাস্তা বানিয়েছি। কিন্তু আমার তৈরি করা রাস্তা নিজেদের বালি তোলার পরে পরিবহণের জন্য ব্যবহার করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই সংস্থা।’’ ওই সংস্থার হয়ে বকলমে বালি তুলছেন সিউড়ি ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূলের শেখ কাজল বলেও মদনমোহনবাবুর দাবি। শেখ কাজলের লোকজন বালি তোলার পরে তা বহনের জন্য মদনমোহনবাবুর তৈরি রাস্তা ব্যবহার করা নিয়েই এ দিন ঝামেলার সূত্রপাত। ওই ঠিকাদার জানান, তিনি শেখ কাজল এবং তাঁর লোকজনকে বলেন, বালি নিয়ে যেতে সরকারি রাস্তা ব্যবহার করলে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগত ভাবে যে অংশ তৈরি করিয়েছেন, সেটা ব্যবহার করা যাবে না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি আপত্তি তোলাতেই রেগে গিয়ে শেখ কাজলের দলবদল আমার লোকেদের উপরে বোমা-বারুদ নিয়ে চড়াও হয়। বালি কারবার দেখভালের জন্য গড়া চালাঘর পুড়িয়ে আমার লোকজনকে মারধর করে। পাঁচটি মোটরবাইকও পুড়িয়ে দেয়। আমি পুলিশকে ফোন করেছিলাম।’’ মারধরে তাঁর ক্যাশিয়ার জখম হয়েছেন বলেও তাঁর দাবি।
কর্মাধ্যক্ষ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘আমি বালি কারবারে যুক্ত নই। কে কার চালা পুড়িয়েছে, জানিও না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy