বড়পাহাড়িতে আদিবাসীদের সচেতনতা সভা। —নিজস্ব চিত্র
তিন বছরেও আদিবাসী এলাকায় রাজ্যের তৃণমূল সরকার তেমন উন্নয়ন ঘটাতে পারেনি, এমনটাই দাবি করল আদিবাসীদের সংগঠন ‘দিশম আদিবাসী জুনি গাঁওতা’। মঙ্গলবার রামপুরহাটের বড়পাহাড়িতে সংগঠনের সভায় উপস্থিত বক্তারা এ নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি নিজেদের ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।
গত ১৫ নভেম্বর সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘বীরভূম জেলা আদিবাসী গাঁওতা’-সহ বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ-সহ রাজ্যের ১৫টি জেলার আদিবাসীদের বিভিন্ন সংগঠন নিয়ে গঠিত হয় আদিবাসীদের এই নতুন সংগঠন। এ দিনই ছিল ওই নতুন সংগঠনের প্রথম সভা। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি লেবাচাঁদ টুডু, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর সুনীল সোরেন-সহ রাজ্য স্তরের অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ। সভায় সুনীল সোরেন অভিযোগ করেন, “আদিবাসী এলাকা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। কোনও উন্নয়নের কাজ হচ্ছে না। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ পরিষেবারও উন্নতি হয়নি। গত তিন বছরে তৃণমূল সরকারের আমলে পিছিয়ে পড়া আদিবাসী এলাকার তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি।” উল্টে সংগঠনের দাবি, রেশন কার্ড, তফশিলি আদিবাসী সম্প্রদায়ের শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে না। আগে যাঁরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা পেতেন, এখন তাঁরা তা-ও পাচ্ছেন না। এমনকী, ইন্দিরা আবাস যোজনায় গৃহনির্মাণ প্রকল্পে প্রকৃত উপভোক্তাদেরও বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে আদিবাসীদের এই নতুন সংগঠনের অভিযোগ।
এ দিন সভার পরে সুনীল জানান, রামপুরহাট থানা এলাকায় বড়পাহাড়ি, বারমেসিয়া, তেঁতুলবাঁধি, দীঘলপাহাড়ি, ধরমপাহাড়ি প্রভৃতি এলাকায় পাথর শিল্পাঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে এখনও পর্যন্ত মালিকপক্ষ তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে কিছু কিছু জায়গায় জোর করে আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে তাঁর অভিযোগ। এ দিকে, এ দিনই রামপুরহাট থানা এলাকার আদিবাসীদের নিয়ে সংগঠন একটি সভা করেছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী শুক্রবার রামপুরহাটের মহকুমাশাসকের কাছে আদিবাসী অধুষ্যিত এলাকায় (বিশেষ করে রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতি) বিভিন্ন উন্নয়নের দাবি জানানো হবে। সেই সঙ্গে উন্নয়নের প্রশ্নে প্রশাসন কী ভূমিকা নিয়েছে, সে ব্যাপারেও সংগঠন জবাবদিহি চাইবে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, সংগঠনের জেলা নেতা দেবু সোরেনের অভিযোগ, সম্প্রতি রাতের অন্ধকারে রামপুরহাট থানার বড়পাহাড়ি মোড়ে দুষ্কৃতীরা সিধো ও কানহোর দু’টি মূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাঁর দাবি, এ বিষয়ে পুলিশকে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও পদক্ষেপ করা হ।নি। সংগঠন ওই ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি করেছে। সংগঠনের তোলা নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে এসডিও (রামপুরহাট) উমাশঙ্কর এস বলেন, “আদিবাসী এলাকায় উন্নয়নের কাজ নিয়ে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। যে সব এলাকায় নিয়ে অভিযোগ উঠছে, সেখানকার বাসিন্দারা সুনির্দিষ্ট ভাবে লিখিত অভিযোগ জানালে পদক্ষেপ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy