সব্জি বাজার আছে। কিন্তু তার কোনও ছাউনি নেই! কার্যত রোদ-বৃষ্টি নিয়েই বসে বাণিজ্য শহর সাঁইথিয়ায় সব্জি বাজার!
নিত্যদিন এই বাজারের যাঁরা সব্জি বিক্রেতা, দুর্ভোগের শেষ নেই তাঁদের। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদেরও। কেন না, বিক্রেতাদের মাথার উপর ছাউনি বলতে বাঁশের খুঁটির উপর টাঙানো চট। নেই কোনও পানীয় জলের ব্যবস্থাও। সেই দুর্ভোগের কথা বলছিলেন সব্জি বিক্রেতা লক্ষ্মী মণ্ডল। তিনি বলেন, “পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। এমনকী এখানে শৌচালয় পর্যন্ত নেই।” ঘটনা হল, বাজারের ভিতরের রাস্তাটি এতই ছোট যে পাশাপাশি দু’জন ক্রেতা হাঁটতে পারেন না। অন্য দিকে ছাউনির জন্য টাঙানো চট মাথায় ঠেকে যায়। সকালের দিকে ভিড়ে ঠাসা সব্জি বাজারের ওই রাস্তা দিয়েই সব্জি বোঝাই রিকশা যাতায়াত নিত্য আরও বিড়ম্বনায় ফেলে ক্রেতা বিক্রেতাদের।
বিক্রেতাদের কাছেই জানা গেল, বাজারের সমস্যার কারণ কী? সব্জি বাজারের নিজস্ব জায়গা নেই। যেখানে বাজার বসে সেটি পুরসভা এক ব্যক্তির কাছে থেকে লিজ নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, আগে সপ্তাহে দু’দিন সাঁইথিয়ায় হাট বসত। সোম ও শুক্রবার। এখন যেখানে সব্জি বাজার বসে, সেখানেই ছিল সেই হাট। তবে তখন সেই হাট পরিচালনা করতেন ওই জায়গার মালিক পক্ষ। তবে সব্জি বিক্রেতাদের তোলা পুরসভা নিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দু’দিনের সব্জি হাট বেশ কয়েক বছর হল প্রতিদিনের সব্জি বাজারে পরিনত হয়েছে।
তবে জায়গার কোনও পরিবর্তন হয়নি। এলাকার যানজট কাটাতে একবার বাজার সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিল পুরসভা। সব্জি বিক্রেতা হালিম শেখ বলছিলেন সেই অভিজ্ঞতার কথা। “সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটা খুব বেশি দিনের কথা নয়। বাজার তার আগের জায়গাতেই ফিরে আসে।”
রাস্তার দু’ধারে সব্জি বাজার বসায় সেই সমস্যা চরম আকার ধারন করে। তাই পুরসভা বাজারটি সরায়। কিন্তু সফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত আগে যেখানে হাট বসত, সেই জায়গার মালিকের কাছ থেকে জায়গাটি সব্জি বাজারের জন্য লিজ নেয় পুরসভা। এলাকার মানুষ বলছেন, ব্যস্ত সময়ের ওই রাস্তা দিয়ে ছোট বড় গাড়ি থেকে রিকশা, স্কুল পড়ুয়ারা যাতায়াত করে। তাতে সব্জি বাজারে ঢোকার মুখের সাবেকী হাটতলা রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে।
কি বলছে পুরসভা? বিদায়ী পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত বলেন, “আসলে যে জায়গায় সব্জি বাজার বসে সেটা লিজের জায়গা। তাই ইচ্ছা থাকলেও সব কিছু করা যায় না। ওই মালিকের সঙ্গে চুক্তিনুযায়ী ওখানে কোনও রকম পাকা নির্মাণ করা যাবে না।” প্রশ্ন ওঠে তাহলে অমন একটি জায়গা কেন সব্জি বাজারের জন্য পুরসভা নির্বাচন করল? বিপ্লববাবুর উত্তর, “পুরসভা ওই চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাই বিকল্প জায়গা না পাওয়া পর্যন্ত সমস্যা থেকেই গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy