এমন নোটিস ঘিরে বিভ্রান্ত্রি। —নিজস্ব চিত্র।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পর আধার কার্ড সম্পর্কে খবর নেবেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত আধার কার্ডের ছবি তোলার কাজ বন্ধ থাকবে। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে আধার কার্ডের ছবি তোলা শুরু হবে।
ক্যাম্পের দেওয়ালে সাঁটানো ছেঁড়া ছেঁড়ে ওই নির্দেশ পত্রগুলিতে নানাবিধ তারিখের উল্লেখ থাকলেও কখন থেকে ছবি তোলার কাজ শুরু হবে তার কোনও উল্লেখ ছিল না। স্বাভাবিক ভাবে বাড়ির কাজকর্ম ফেলে সকাল সকাল সিউড়ি পুরসভায় হওয়া আধার কার্ডের ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে হয়রানির শিকার হন শহরের বাসিন্দারা। শুক্রবার সিউড়ি পুরসভা অফিস চত্বরে হওয়া ওই ক্যাম্পের সামনে ভোটার পরিচয়পত্র সঙ্গে শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ফিরে যেতে হল সকলকে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থাকার পরও যখন দরজা খুলল না, তখন ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন তাঁরা। যদিওবা দরজা আংশিক খোলা হল, কিন্তু কখন কাজ শুরু হবে তার উত্তর মিলল না। শুধু মিলল ধমক। দরজা আংশিক খুলে এক যুবক ধমকে বললেন, “দেখছেন তো দরজাটা বন্ধ আছে। কেন বিরক্ত করছেন। ফর্ম শেষ। এক মাসের আগে আসবেন না।” এই বলে সশব্দে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল।
বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এ দিন আধার কার্ডের ছবি তোলার জন্য এসেছিলেন সিউড়িতে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছায়ারানি ভট্টাচার্য, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিপ্রকাশ মুখোপাধ্যায়, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোহনদাস ত্যাগী প্রমুখ ক্ষোভের সুরে বলেলেন, “দিনের পর দিন পুরসভায় আসছি আধার কার্ড করতে। আর ফিরে যাচ্ছি ঘণ্টা কয়েক অপেক্ষা করার পর।” তাঁদের দাবি, জেলা প্রশাসনের অফিসে আধার কার্ড তৈরির ক্যাম্প করা হোক। এই হইরানি আর সহ্য হচ্ছে না!
গত তিন বছর ধরে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো বীরভূমেও আধার কার্ড তৈরি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ছবি, প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার পরেও জেলার বহু মানুষ এখনও আধার কার্ড পাননি। সিউড়ি ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকানা সঠিক না থাকার জন্য অনেক আধার কার্ড বিলি করা যায়নি। ফলে কয়েক হাজার আধার কার্ড যথাস্থানে ফেরত্ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) নিবিল ঈশ্বরারী বলেছেন, “আধার কার্ড তৈরি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তাই সেই প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে বীরভূমের সমস্ত বুথে, ব্লকে এবং ৬টি পুরসভায় ক্যাম্প খোলা হয়েছে। যাতে সমস্ত মানুষ আধার কার্ডে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।”
কিন্তু সেটা করতে এসেই তো হয়রানির শিকার হচ্ছেন বাসিন্দারা। কবে, কখন থেকে ছবি তোলা হবে তার স্পষ্ট করে কেন জানানো হচ্ছে না? শুক্রবারের সমস্যা জানার পরে নিবিলবাবুর বক্তব্য, “যাঁরা আধার কার্ড করতে এসে হয়রান হচ্ছেন, তাঁরা পুরসভা কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছেন না কেন?” শহরবাসীর ক্ষোভ, “কার কাছে জানাব! এ দিন পুরকর্তৃপক্ষের কাউকেই অফিসে পাওয়া যায়নি।”
এ ব্যাপারে পরে টেলিফোনে পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা প্রশাসনের নির্দেশ মতো একটি ঘর দিয়েছি মাত্র। কিন্তু আধার কার্ডের প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। জেলা প্রশাসন আধার কার্ড করার জন্য বিভিন্ন এজেন্সিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ফলে আমাদের দেখভালের সুযোগ তা কোথায়? এজেন্সির কথা মতোই আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকি।” উজ্জ্বলবাবুর দাবি, আধার কার্ড তৈরি করার জন্য বহুবার এজেন্সি বদল করেছে জেলা প্রশাসন। এ প্রসঙ্গে নিবিলবাবুর বক্তব্য, “আধার কার্ড তৈরি করার জন্য অনেক অফিসারকে নিযুক্ত করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখছি, তাঁরা কী কাজ করছেন। তার পর যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy