Advertisement
১৬ মে ২০২৪

বন্ধুকে খুনের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন সাজা রঘুনাথপুরে

বন্ধুকে খুন করার দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। বুধবার রঘুনাথপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক নন্দন দেববর্মন খুনের দায়েনিতুড়িয়ার লাইন ধাওড়া গ্রামের বাসিন্দা সাজেন টুডুকে ওই সাজা দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০০:৫৯
Share: Save:

বন্ধুকে খুন করার দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। বুধবার রঘুনাথপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক নন্দন দেববর্মন খুনের দায়েনিতুড়িয়ার লাইন ধাওড়া গ্রামের বাসিন্দা সাজেন টুডুকে ওই সাজা দিয়েছেন।

মামলার সরকারি আইনজীবী অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিচারক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী পড়শি তথা বন্ধু রবিলাল মুর্মুকে খুন করার দায়ে সাজেনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং তিন হাজার টাকা জরিমানা (অনাদায়ে আরও তিন মাস সশ্রম কারাবাস) নির্দেশ দেন।

অমলেন্দুবাবু জানান, খুনের ঘটনা ঘটেছিল ২০১২ সালের ১২ নভেম্বর রাতে। পর দিন ধানখেতে দেহ মিলেছিল রবিলালের। সে দিনই সাজেনের বিরুদ্ধে থানায় ভাইকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রবিলালের দাদা রবিদাস মুর্মু। ওই দিনই সাজেনকে গ্রেফতার করেছিল নিতুড়িয়া থানার পুলিশ। রঘুনাথপুর আদালত সাজেনকে জেল হাজতে পাঠায়। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার উত্তম মণ্ডল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়াতে আর জামিন পায়নি সাজেন। জেলবন্দি অবস্থাতেই তার বিচার শেষ হয়ে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ও দোষী, দু’জনেই ছিলেন পেশায় ট্রাক্টর চালক। ঘটনার কয়েক মাস আগে সাজেনের কাছ থেকে সাত-আটশো টাকা ধার নিয়েছিলে রবিলাল। সেই টাকা চাইতে আগে সাজেন গিয়েছিল রবিলালের বাড়িতে। টাকা না পেয়ে বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে রবিলালের স্ত্রীকে মারধরও করেছিল সাজেন। সরকারি কৌঁসুলি বলেন, “ওই ঘটনার পরে স্থানীয় সালিশি সভায় সাজেনকে প্রকাশ্যেই ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হয়েছিল।” সেই ঘটনার পরেই খুন হন রবিলাল। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছিল, কালীপুজোর দিন কয়েক আগে লাইনধাওড়া গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রবিলাল। সাজেনের সঙ্গে পাশের দেবীবাড়ি গ্রামে জুয়ার আসরে বসে দু’জনে জুয়া খেলেছি। খেলায় কিছু টাকা জিতেছিলেন রবিলাল। বাড়ি ফেরার পথে সাজেন রাবিলালের কাছে তার পুরনো ধারের টাকা দাবি করে। সেই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা বাধায় রবিলালের গামছা দিয়েই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সাজেন। পরের দিন একটি ইটভাটা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সরকারি আইনজীবী বলেন, “যেহেতু খুনের ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না, তাই পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সাজা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারক।” বস্তুত, তদন্তের কাজটি তাদের কাছে যথেষ্ট কঠিন ছিল বলেই পুলিশের দাবি। অমলেন্দুবাবু জানিয়েছেন, দেহ উদ্ধারের আগের রাতে শেষবারের মতো রবিলালে সঙ্গে দেখা গিয়েছিল সাজেনকেই। সেই তথ্য মাথায় রেখেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। আদালতে বিচারপর্ব শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের ২০ জুন থেকে। মামলায় মোট ২৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE