Advertisement
২৩ মে ২০২৪

ভোগান্তি শেষে উঠল কর্মবিরতি

অবশেষে কর্মবিরতি উঠল পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতে। গত ২২ জানুয়ারি পাত্রসায়র ব্লক অফিসের ভিতরে ব্লক সংসদের সভাচলাকালীন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, দুই কর্মাধ্যক্ষকে মারধর এবং অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩০
Share: Save:

অবশেষে কর্মবিরতি উঠল পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতে।

গত ২২ জানুয়ারি পাত্রসায়র ব্লক অফিসের ভিতরে ব্লক সংসদের সভাচলাকালীন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, দুই কর্মাধ্যক্ষকে মারধর এবং অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদেই গত ২৭ জানুয়ারি থেকে পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতে কর্মবিরতি শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) পলাশ সেনগুপ্ত-র উপস্থিতিতে পাত্রসায়র ব্লক অফিসে একটি বৈঠক হয়। প্রশাসনের তরফে সব রকম নিরাপত্তার আশ্বাস পাওয়ার পরে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

কর্মবিরতি চলাকালীন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষরা এবং পাত্রসায়র, বালসি-২, বিউর বেতুড়, বীরসিংহ, জামকুড়ি ও কুশদ্বীপ পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান সহ জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের অফিসে গরহাজির থাকায় টানা সাতদিন ধরে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল উন্নয়ন-সহ দৈনন্দিন কাজকর্ম। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে আচমকা এই কর্মবিরতির ফলে বিপাকে পড়েছিলেন সাধারণ মানুষ।

দিলীপবাবু বলেন, “এ দিন দুপুরে মহকুমাশাসক ব্লক অফিসে একটি বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে আমি, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সব কর্মাধ্যক্ষ এবং ৬টি পঞ্চায়েতের প্রধানরা উপস্থিত ছিলাম। ব্লক অফিসের ভিতরে ভবিষ্যতে এমন নক্কারজনক ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক। একই সঙ্গে ব্লক অফিস চত্বরে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েনের জন্যও বলেছেন।” তিনি জানান, জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীও কর্মবিরতি প্রত্যাহারের জন্য বলেছেন। সভাধিপতি ও মহকুমাশাসকের কথায় এবং এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিলেন। সভাপতি জানিয়েছেন, আজ বুধবার থেকে পঞ্চায়েত সমিতি ও সব পঞ্চায়েতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হবে।

রাজনৈতিক সমীকরণে পাত্রসায়র ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টি পঞ্চায়েতে ক্ষমতার রাশ তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর হাতে। পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতাসীন তাঁরই ঘনিষ্ঠেরা। এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন ব্লক সভাপতির শিবিরের নেতারাই। যে ৬টি পঞ্চায়েতে কর্মবিরতি হয়েছে সেগুলি তাঁরই অনুগামীদের দখলে। স্নেহেশবাবুর সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর অনুগামী ব্লক তৃণমূল নেতা জিয়ারুল ইসলামের দাবি, “৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হলেও মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা প্রত্যাহার করেছি। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই তৃণমূল নেতা বাবলু সিংহ, গোপে দত্তদের পুলিশ অবশ্য ধরেনি।” কর্মবিরতি প্রত্যাহার হওয়ায় সাধারণ মানুষ অবশ্য হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরের ক্ষোভ মেটেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE