ঘোষিত ভাবে শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা চার দিনের। কিন্তু বছর বছর প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবলীলায় তা দশ-পনেরো দিনে গড়ায়। ফলে পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের পাশাপাশি বিশ্বভারতীর স্বাভাবিক কাজকর্মও ব্যাহত হয়। এ বার তা রুখতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করল বিশ্বভারতী। ঠিক হয়েছে, মেলার মাঠ সংলগ্ন পূর্বপল্লির রাস্তা থেকে পদ্মভবন পর্যন্ত এবং শান্তিনিকেতন তদন্ত কেন্দ্রের সামনে থেকে ভুবনডাঙা পর্যন্ত রাস্তার উপর স্টল বসতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে নাগরদোলা-সহ বেশ কিছু স্টলকে এসডিপিও বাংলোর পিছন দিকের মাঠেও স্থানান্তরিত করা হবে। সোমবার উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের উপস্থিতিতে শান্তিনিকেতন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদ এবং অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে হওয়া ওই বৈঠকে সম্মিলিত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে শান্তিনিকেতনে শুরু হচ্ছে ১২০তম পৌষ মেলা। এই মেলাকে সর্বাঙ্গীণ ভাবে সুন্দর করে তোলার পাশাপাশি সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটি ও উপসমিতি গঠন করেছে বিশ্বভারতী। গত ১৫ নভেম্বর বিশ্বভারতীর চিনভবনে এ বছরের পৌষ উত্সব নিয়ে উপাচার্যের সভাপতিত্বে একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছিল। উপসমিতিগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর পাশাপাশি বেশ কিছু উপসমিতিকে তুলে দিয়ে মূল কমিটির সঙ্গে যোগও করা হয়। এমনিতে প্রাচীন এই গ্রামীণ মেলা চার দিনের জন্য নির্ধারিত হলেও কার্যত দশ দিনেরও বেশি সময় ধরে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা মূল মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। ফলে চার দিনে পরে ‘ভাঙা মেলা’র জেরে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন থেকে শুরু করে বিশ্বভারতীর নানা রকম কাজকর্ম ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। এ বার তাই মেলার স্টল বিলির আগেই উপাচার্যের নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শুরু করল বিশ্বভারতী।
এ দিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন শান্তিনিকেতন চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার, বিশ্বভারতীর প্রোভোস্ট অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন এবং বিশ্বভারতী কর্মী পরিষদের সম্পাদকেরা। বৈঠকে যোগ দেন মেলার দিনগুলিতে পানীয় জল, বিদ্যুত্-সহ বিশ্বভারতীর নানা জরুরি পরিষেবা বিভাগের আধিকারিকেরাও। বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদের সম্পাদক কানাই চট্টোপাধ্যায় ও সৌগত সামন্ত বলেন, “উপাচার্যের পরামর্শে নাগরদোলা-সহ বেশ কিছু স্টলকে এসডিপিও বাংলোর পিছন দিকের মাঠে স্থানান্তর করার ব্যাপারে আমরা সহমত হয়েছি। পাশাপাশি মেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তা শান্তিনিকেতন তদন্ত কেন্দ্রে থেকে এক দিকে পদ্মভবন, অন্য দিকে ভুবনডাঙা পর্যন্ত অংশে এ বার কোনও স্টল বসতে দেওয়া হবে না। যাতে চার দিনের পৌষ উত্সবের শেষে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন এবং বিশ্বভারতীর অন্যান্য কাজকর্ম ব্যাহত না হয়, তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy