লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোট কমেছে রেলশহর আদ্রায়। এই অবস্থায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে রেল বাজেটকেই হাতিয়ার করেছে এ রাজ্যের শাসক দল। সপ্তাহব্যাপী পথসভা করে এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করছে তারা। তাতে আদ্রায় ‘রেলের প্রকল্পগুলিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে আক্রমণ করা হয়েছে কেন্দ্রকে।
হারানো জমি পুনরুদ্ধারের জন্য তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ আনছে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। গত বিধানসভা ভোটে আদ্রায় ভালো ব্যবধানে এগিয়েছিলেন কাশীপুরের তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া। কিন্তু লোকসভাতে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিজেপি তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। বিজেপি নেতাদের যুক্তি, বিধানসভা ভোটের আগে রেলমন্ত্রী হিসেবে আদ্রা ডিভিশনে এসে এনটিপিসির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে মৌ স্বাক্ষর করে কার্যত মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে তার সুফল ঝুলিতে ভরেছিল তৃণমূল। কিন্তু তিন বছরের মধ্যেই বিজেপির উত্থানে কিছুটা হলেও শঙ্কিত আদ্রার তৃণমূল নেতারা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল বাজেটে আদ্রার বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং উড়ালপুলের বিষয়ে নতুন রেলমন্ত্রী কিছুই উল্লেখ করেননি। তাই আদ্রার প্রতি ‘বঞ্চনাকে’ হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত তৈরির সুযোগ হাতছাড়া করতে দেরি করেনি তৃণমূল।
রেলের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত থাকা আদ্রাতে রেলের উন্নয়ন বরাবরই বড় ফ্যাক্টর। স্বভাবতই রেলের বিষয়গুলিকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল। সাতদিন ধরে আদ্রার বিভিন্ন প্রান্তে পথসভা করে তৃণমূল প্রচার করেছে, আদ্রার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার ক্ষেত্রে বর্তমান রেল মন্ত্রক বঞ্চনা করেছে। আদ্রার তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবে বলেন, “নির্বাচনের আগে বিজেপি প্রচার করেছিল, তারা ক্ষমতায় এলে থমকে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ার কাজে গতি আসবে। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো হয়েছে। এ ছাড়া আদ্রায় দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে উড়ালপুল নির্মাণের। রেল কর্তৃপক্ষ সেই দাবিও অগ্রাহ্য করছে। রেলের হাসপাতালের অবস্থাও খারাপ। রেলের স্কুলগুলি থেকে বাংলা মাধ্যম তুলে দিয়ে সিবিএসই পাঠ্যক্রম চালু করতে চাইছে রেল কর্তৃপক্ষ।”
বিজেপি-র পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “উড়ালপুল নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাজ্য সরকার তাদের অংশের টাকা বরাদ্দ না করায় সেই কাজ আটকে রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে রেলের ভাঁড়ারে অর্থ না থাকলেও বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন বলেই সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। আদ্রার বাসিন্দারা সেটা বুঝেই ওঁদের থেকে মুখ ঘুরিয়েছেন। এখন অপপ্রচারে নেমেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy