টাকা চাই। বুধবার সিউড়িতে ছবিটি তুলেছে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
সব রকমের লেনদেন বন্ধ থাকায় বীরভূম কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের মূল শাখায় বুধবারও বিক্ষোভ দেখালেন বেশ কিছু আমানতকারী। এ দিন পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলেও গচ্ছিত টাকা তুলতে না পেরে ক্রমশই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে গ্রাহকদের। অনেকেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছেন। তবে, এই চিত্র শুধু সিউড়িরই নয়। ওই ব্যাঙ্কের ১৭টি শাখাতেই কম বেশি এমন দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে। গ্রাহকেদের অসন্তোষের কথা ভেবে ব্যাঙ্কে পুলিশি পাহারা বাড়ানো হয়েছে। ওই ব্যাঙ্কের কর্মীরা আপাতত নিরাপদে থাকলেও সমস্যা না মিটলে পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকেই। বুধবার সিউড়িতে যেন তারই ইঙ্গিত মিলল।
ওই কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ২৯ হাজার ৩০০ টাকা জমা রয়েছে সিউড়ির তিলপাড়ার বধূ পূজা সাহুর। এ দিন সেই টাকাই তুলতে এসে হাতে কিছুই পাননি। সিউড়ির রুটি পাড়ার বাসিন্দা শেখ নুর আলির আবার জমা রয়েছে লক্ষাধিক টাকা। টাকা তুলতে এসেছিলেন তিনিও। আবার কড়িধ্যা তরুণী বধূ করবী লহরীও এসেছিলেন কষ্ট করে জমানো ২০ হাজার টাকা তুলতে। কিন্তু টাকা-পয়সা তুলতে না পেরে প্রত্যেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তাঁরা দাবি করতে থাকেন, কবে অবস্থা স্বাভাবিক হবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তার জবাব দিক। গ্রাহকেরা অবশ্য কোনও সদুত্তর পাননি। পুলিশ কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়। প্রসঙ্গত, বিপুল অনাদায়ী ঋণ আদায় করতে অসমর্থ হওয়ায় শনিবার থেকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে ওই কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের প্রতিটি শাখায় সমস্ত রকম লেনদেনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, এটি সরকারি ব্যাঙ্ক। সকলের টাকাই সুরক্ষিত রয়েছে। অচলাবস্থা কাটাতে সব রকমের চেষ্টা চলছে। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম এ দিনও বলেন, “রাজ্য সমবায় দফতর বিষয়টি দেখছে। শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।”
প্রায় ৬২ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ায় ২০০৭ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ‘ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট ১১/১’ আরোপ করে বীরভূম জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সব ক’টি শাখায় ঋণদানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম হল, কোনও ঋণ তথা অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) পরিমাণ ৫ শতাংশের বেশি হওয়া চলবে না। কিন্তু বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক যে পরিমাণ ঋণ দিয়েছিল, তার ৫২ শতাংশই খেলাপি বা অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়। সে জন্যই এমন কড়া পদক্ষেপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy