কোর্ট চত্বরে ধৃত বিপ্লব।—নিজস্ব চিত্র
সন্ন্যাসিনীকে গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বিপ্লব মণ্ডলকে গ্রেফতার করল হুড়া থানার পুলিশ। সোমবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় আর এক অভিযুক্ত তাবুল সর্দারকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বছর পঁচিশের ওই মহিলা হুড়ার একটি ছোট্ট আশ্রমে থাকেন। তাঁর দাবি, গত ২৪ নভেম্বর তিনি ভিক্ষা সেরে সন্ধ্যার দিকে কলাবনী পঞ্চায়েত ভবনের পাশ দিয়ে আশ্রমে ফিরছিলেন। সেই সময়ে তিনজন তাঁকে টেনে পঞ্চায়েত ভবনের দোতলায় নিয়ে যায়। ওই তিনজনের মধ্যে একজন তৃণমূলের অঞ্চল নেতা বিপ্লব মণ্ডল, অন্যজন ওই পঞ্চায়েতের চৌকিদারের ছেলে তাবুল সর্দার। বাকি একজনকে তিনি চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছিলেন। তার পর ওরা তিনজনে তাঁর মুখে কাপড় চাপা দিয়ে পঞ্চায়েতের দোতলায় ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। ওই মহিলা আরও দাবি করেছেন, ভোরের দিকে বিপ্লব মোটরবাইকে তাঁকে আদ্রায় ছেড়ে দিয়ে আসে। কাউকে জানালে খুন করে জলে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল বলে দাবি।
এখানেই শেষ নয়, ঘটনার পর ওই মহিলা তাঁর উপর অত্যাচারের অভিযোগ জানাতে বারবার থানায় গিয়েছেন। তিনি জানান, ২৫ নভেম্বর এক আশ্রমিককে নিয়ে তিনি হুড়া থানায় যান। কিন্তু এক পুলিশ কর্মী জানিয়ে দেন, বড়বাবু থানায় নেই। তাই তিনি অভিযোগ নিতে পারবেন না। পরদিনও একই অজুহাত দেয় থানার পুলিশ। পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগে ওই সন্ন্যাসিনী জানিয়েছেন, ২৫-২৮ নভেম্বর তিনি একাধিক বার হুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করেন। শেষ অবধি ২ নভেম্বর তিনি পুরুলিয়া মহিলা থানায় যান। কিন্তু ওই থানাতেও তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, অভিযোগ নেওয়া হবে না। জেলা আদালতের কয়েকজন আইনজীবীর সহায়তায় গত ৩ ডিসেম্বর জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন। পরের দিন আইনজীবীদের সহায়তায় আদালতে অভিযোগ জানানোর আগেই অবশ্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই দিনই নিযার্তিতার অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকার তৃণমূল নেতা বিপ্লব মণ্ডল এবং ওই গ্রামেরই বাসিন্দা তাবুল সর্দার-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষনের মামলা রুজু করে পুলিশ। তারপর থেকে অধরাই ছিল অভিযুক্তেরা।
পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শনিবার রাতে তাবুলকে কলাবনী এলাকা থেকে ধরা হয়। রবিবার বিপ্লবকে ধরা হয়েছে। তবে ওই নেতাকে কোথা থেকে ধরা হয়েছে, এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ধৃত অবশ্য নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। এ দিকে, ঘটনার পরের দিনই ওই মহিলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আশ্রমেরই এক বাসিন্দা, যিনি হুড়া থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন বা পরে মহিলা থানাতেও, এ দিন তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয় বলে জানান তাঁদের আইনজীবী দেবদত্ত মুখোপাধ্যায়। সব অভিযুক্তকে ধরার দাবিতে এ দিন কলাবনী এলাকায় মিছিল করে সিপিএম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy