স্বাস্থ্য বিল পাশের দিন বিধানসভায় টানা প্রায় এক ঘণ্টা বক্তৃতা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের রাশ টানতে তৈরি সেই বিল নিয়ে বিরোধীদের কোনও সমালোচনাকেই গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি। কিন্তু তার পাঁচ দিন পরে স্বাস্থ্য বাজেট পেশের সময়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীই কেন বিধানসভায় অনুপস্থিত, বুধবার সেই প্রশ্ন তুললেন বিরোধীরা।
বিরোধী পক্ষের আরও প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর হাতে যে-সব দফতর রয়েছে, তার মধ্যে বেশ কয়েকটির বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়নি কেন? এবং যে-ক’টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেখানে কেন উপস্থিত থাকবেন না মুখ্যমন্ত্রী? বাজেট সংক্রান্ত প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারবেন না বলে মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলেও বিধানসভার বাইরে অভিযোগ আনেন বিরোধীরা।
বুধবার, নারী দিবসে বিধানসভার অধিবেশনের প্রথম পর্বে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নারী দিবস নিয়ে দীর্ঘ বক্তৃতাও দেন। তখনও অনেকে মনে করেছিলেন, বেলা ৪টে নাগাদ স্বাস্থ্য বাজেট পেশ করার সময়ে তিনি থাকবেন। কারণ, দফতরটি তাঁরই অধীনে আছে এবং এখন রাজ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের অস্বাস্থ্য নিয়েই তোলপাড় চলছে। কিন্তু অধিবেশনের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পরেই জানা যায়, স্বাস্থ্য বাজেটের সময় থাকছেন না মমতা। বিধানসভার সর্বত্র শুরু হয়ে যায় জল্পনা। স্বাস্থ্যের বদলে নারী দিবসকে কেন পছন্দের দিক থেকে এগিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী, ওঠে সেই প্রশ্নও।
স্বাস্থ্য বাজেট নিয়ে বিতর্কের সময় কংগ্রেসের অসিত মিত্র মন্তব্য করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা একাধিক বিভাগের বাজেট নিয়ে আলোচনা হল না। স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা রাখা হল। তাতেও উনি নেই!’’ তাঁরা এই বাজেট সমর্থন করছেন না বলে জানিয়ে দিন অসিতবাবু। তাঁর প্রশ্ন, সরকারি হাসপাতালের হাল ফিরবে কবে? ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে-সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের কথা বলছেন, চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলছি, তার জন্য ৮৭৫০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়,’’ বলেন কংগ্রেসর ওই বিধায়ক। বিরোধীদের কটাক্ষ, চার দিকে ডাক্তারের অভাব। তার পরেও কি বলতে হবে, স্বাস্থ্যে আলো জ্বলছে! ‘আলো জ্বলছে বটে, তবে সেটা বাসের সামনে লাগানো হেডলাইটের নয়, গরুর গাড়ির হেডলাইটের’— এ ভাবেই বিঁধেছেন বিরোধী সদস্যেরা।
আরও পড়ুন: বাড়ছে রেফার রোগ, অনাস্থার শেষ কবে
কিন্তু বাজেট পেশের সময়েই মুখ্যমন্ত্রী অনুপস্থিত কেন? এর জবাবে শশীদেবী বিধানসভার বাইরে বলেন, ‘‘অকারণ হইচই করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী সব কাজই করে দিয়েছেন। বাজেটটাও তৈরি করে দিয়েছেন। ওঁর সারা বছর করা কাজ একসঙ্গে মিলিয়েই তো বাজেট পেশ হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy