আমজনতা এবং বিরোধীদের একাংশ প্রশ্ন তুলছিলেন, বিজেপি যদি গোর্খাল্যান্ডের দাবি সমর্থন না-ই করে, তা হলে তারা বিমল গুরুঙ্গের পক্ষে কেন? এ বার সেই প্রশ্ন উঠল বিজেপির ভিতরেই। সল্টলেকের পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে শনিবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই প্রশ্ন তুললেন মাদারিহাটের দলীয় বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। উত্তরবঙ্গের নেতা হওয়ায় যাঁকে নিয়মিতই মানুষের এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।
মনোজবাবু এ দিন বৈঠকে বলেন, এক দিকে বলা হচ্ছে, বিজেপি গোর্খাল্যান্ড চায় না। অথচ, মোর্চার যে নেতা গুরুঙ্গ সেই দাবিতে অনড়, তাঁর পক্ষে বার বার দাঁড়ানো হচ্ছে। তা হলে দলের অবস্থানটা কী? এই প্রেক্ষিতেই কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বকে পাহাড় নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ জানান মনোজবাবু। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সকলেই তখন বৈঠকে ছিলেন। তবে তাঁরা মনোজবাবুর প্রশ্নের জবাব দেননি।
বস্তুত, দিলীপবাবু এবং রাহুলবাবু এ দিনও পাহাড়ে অশান্তির দায় মুখ্যমন্ত্রীর উপরেই চাপিয়েছেন। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল বিনয় তামাঙ্গকে নেতা বানিয়ে পাহাড় দখল করার চেষ্টা করছে। পাহাড়ের অশান্তি এবং এক জন পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর জন্য তৃণমূলের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাই দায়ী।’’ দিলীপবাবুর সংযোজন, ‘‘বিমল গুরুঙ্গকে সন্ত্রাসবাদী বানানো হচ্ছে। শুক্রবার যে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সেটা তো মাওবাদীদেরও হতে পারে!’’
রাহুলবাবুর মতে, মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলতেন, পাহাড় হাসছে। এখন সেই পাহাড় জ্বলতে থাকায় নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে মুখ্যমন্ত্রী সন্ত্রাসের গল্প ফাঁদছেন। রাহুলবাবুর কথায়, ‘‘কোথা থেকে অস্ত্র এল, অস্ত্রগুলো কাদের হাতে ছিল, এ সব প্রশ্নের উত্তর চাই। মুখ্যমন্ত্রীর সাহস থাকলে কেন্দ্রকে বলে সিবিআই বা এনআইএ তদন্ত করান। তা হলেই সত্য জানা যাবে।’’ দার্জিলিঙে নিহত অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পুলিশমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে, এই দাবিও করেন রাহুলবাবু।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিজেপির ওই অভিযোগকে অবশ্য আমলই দিচ্ছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিমল গুরুঙ্গের মতো রাষ্ট্রদ্রোহীর স্বরই শোনা যাচ্ছে বিজেপি-র ওই নেতাদের মুখে। অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর বেদনা ভোলার নয়। এই পরিস্থিতিতে কোনও সুবুদ্ধিসম্পন্ন রাজনৈতিক নেতা এমন কথা বলতে পারতেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy